পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ

আয়েষার পত্র

 আয়েষা লেখনী-হস্তে পত্র লিখিতে বসিয়াছেন। মুখকান্তি অত্যন্ত গম্ভীর, স্থির; জগৎসিংহকে পত্র লিখিতেছেন। একখানা কাগজ লইয়া পত্র আরম্ভ করিলেন। প্রথমে লিখিলেন, “প্রাণাধিক” তখনই প্রাণাধিক শব্দ কাটিয়া দিয়া লিখিলেন, “রাজকুমার”, “প্রাণাধিক” শব্দ কাটিয়া “রাজকুমার” লিখিতে আয়েষার অশ্রুধারা বিগ্নলিত হইয়া পত্রে পড়িল। আয়েষা অমনি সে পত্র ছিঁড়িয়া ফেলিলেন। পুনর্ব্বার অন্য কাগজে আরম্ভ করিলেন; কিন্তু কয়েক ছত্র লেখা হইতে না হইতে আবার পত্র অশ্রুকলঙ্কিত হইল। আয়েষা সে লিপিও বিনষ্ট করিলেন। অন্যবারে অশ্রুচিহ্নশূন্য একখণ্ড লিপি সমাধা করিলেন। সমাধা করিয়া একবার পড়িতে লাগিলেন, পড়িতে নয়নবাষ্পে দৃষ্টিলোপ হইতে লাগিল। কোন মতে লিপি বদ্ধ করিয়া, দূতহস্তে দিলেন। লিপি লইয়া দূত রাজপুত-শিবিরাভিমুখে যাত্রা করিল। আয়েষা একাকিনী পালঙ্ক-শয়নে রোদন করিতে লাগিলেন।

 জগৎসিংহ পত্র পাইয়া পড়িতে লাগিলেন!

 “রাজকুমার!

 আমি যে তোমার সহিত সাক্ষাৎ করি নাই, সে আত্মধৈর্য্যের প্রতি