পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।








দ্বাবিংশতিতম পরিচ্ছেদ

সমাপ্তি

 ফুল ফুটিল। অভিরাম স্বামী গড় মান্দারণে গমন করিয়া, মহাসমারোহের সহিত দৌহিত্রীকে জগৎসিংহের পাণিগ্রহীত্রী করিলেন।

 উৎসবাদির জন্য জগৎসিংহ নিজ সহচরবর্গকে জাহানাবাদ হইতে নিমন্ত্রণ করিয়া আনাইয়াছিলেন। তিলোত্তমার পিতৃবন্ধুও অনেকে আহবান প্রাপ্ত হইয়। আনন্দকার্য্যে আসিয়া আমোদ-আহলাদ করিলেন।

 আয়েষার প্রার্থনামতে জগৎসিংহ তাহাকেও সংবাদ করিয়াছিলুেন। আয়েষা নিজ কিশোর-বয়স্ক সহোদরকে সঙ্গে লইয়া এবং আর আর পৌরবর্গে বেষ্টিত হইয়া আসিয়াছিলেন।

 আয়েষা যবনী হইয়াও তিলোত্তমা আর জগৎসিংহের অধিক স্নেহবশতঃ সহচরবর্গের সহিত দুর্গান্তঃপুরবাসিনী হইলেন। পাঠক মনে করিতে পারেন যে, আয়েষা তাপিতহৃদয়ে বিবাহের উৎসবে উৎসব করিতে পারেন নাই। বস্তুতঃ তাহা নহে। আয়েষা নিজ সহর্ষচিত্তের প্রফুল্লতায়, সকলকেই প্রফুল্ল করিতে লাগিলেন; প্রস্ফুট শারদ সরসীরুহের মন্দান্দোলন স্বরূপ সেই মূহুমধুর হাসিতে সর্ব্বত্র ঐসম্পাদন করিতে লাগিলেন।

 বিবাহকার্য্য নিশীথে সমাপ্ত হইল। আয়েষা তখন সহচরগণ সহিত প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ করিলেন; হাসিয়া বিমলার নিকট বিদায় লইলেন।