এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
দুর্গেশনন্দিনী
বিমল ভাবিলেন যে, রাজপুত্রের সহিত ব্রাহ্মণের সাক্ষাতের কোন প্রয়োজন নাই; বরং তাতে অনিষ্ট আছে। অতএব কি প্রকারে তাহাকে বিদায় দিবেন, চিন্তা করিতেছিলেন। গজপতি নিজেই তাহার সূচনা করিয়া দিলেন।
ব্রাহ্মণ পুনর্ব্বার বিমলার পৃষ্ঠের নিকট আসিয়া অঞ্চল ধরিয়াছেন; বিমলা জিজ্ঞাসা করিলেন, “আবার কি?”
ব্রাহ্মণ অস্ফূটস্বরে কহিলেন, “সে কত দূর?”
বি। | “কি কত দূর? |
দি। | সেই বটগাছ?” |
বি। | কোন্ বটগাছ? |
দি। | যেখানে তোমরা সে দিন দেখিয়াছিলে? |
বি। | কি দেখিয়াছিলাম? |
দি। | রাত্রিকালে নাম করিতে নাই। |
বিমলা বুঝিতে পারিয়া সুযোগ পাইলেন।
গম্ভীরস্বরে বলিলেন, “ইঃ।”
ব্রাহ্মণ অধিকতর ভীত হইয়া কহিলেন, “কি গা?”
বিমলা অস্ফূটস্বরে শৈলেশ্বর-নিকটস্থ বটবৃক্ষের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া কহিলেন,—“সে ঐ বটতলা।”
দিগ্গজ আর নড়িলেন না; গতিশক্তিরহিত অশ্বথপত্রের ন্যায় কাঁপিতে লাগিলেন।
বিমলা বলিলেন, “আইস।”
ব্রাহ্মণ কাঁপিতে কাঁপিতে কহিলেন, “আমি আর যাইতে পারিব না।”