বিমলা কহিলেন, “আমারও ভয় করিতেছে।”
ব্রাহ্মণ এই শুনিয়া পা ফিরাইয়া পলায়নোদ্যত হইলেন।
বিমল বৃক্ষপানে দৃষ্টি করিয়া দেখিলেন, বৃক্ষমূলে একটা ধবলাকার কি পদার্থ রহিয়াছে। তিনি জানিতেন যে, বৃক্ষমূলে শৈলেশ্বরের ষাঁড় শুইয়া থাকে; কিন্তু গজপতিকে কহিলেন, “গজপতি! ইষ্টদেবের নাম জপ, বৃক্ষমূলে কি দেখিতেছ?”
“ওগো বাবা গো—”বলিয়াই দিগ্গজ একেবারে চম্পট। দীর্ঘ দীর্ঘ চরণ—তিলার্দ্ধ-মধ্যে অর্দ্ধক্রোশ পার হইয়া গেলেন।
বিমলা গজপতির স্বভাব জানিতেন, অতএব বেশ বুঝিতে পারিলেন যে, তিনি একেবারে দুর্গ-দ্বারে গিয়া উপস্থিত হইবেন।
বিমলা তখন নিশ্চিন্ত হইয়া মন্দিরাভিমুখে চলিলেন।
বিমলা সকল দিক্ ভাবিয়া আসিয়াছিলেন, কেবল এক দিক ভাবিয়া আইসেন নাই। রাজপুত্ত্র মন্দিরে আসিয়াছেন কি? মনে এইরূপ সন্দেহ জন্মিলে বিমলার বিষম ক্লেশ হইল। মনে করিয়া দেখিলেন যে, রাজপুত্র আসার নিশ্চিত কথা কিছু বলেন নাই; কেবল বলিয়াছিলেন যে, “এইখানে আমার সাক্ষাৎ পাইবে; এখানে না দেখা পাও, তবে সাক্ষাৎ হইল না।” তবে ত না আসারও সম্ভাবনা।
যদি না আসিয়া থাকেন, তবে এত ক্লেশ বৃথা হইল। বিমলা বিষণ্ণ হইয়া আপনা-আপনি কহিতে লাগিলেন, “এ কথা আগে কেন ভাবি নাই? ব্রাহ্মণকেই বা কেন তাড়াইলাম? একাকিনী এ রাত্রে কি প্রকারে ফিরিয়া যাইব! শৈলেশ্বর! তোমার ইচ্ছা!”
বটবৃক্ষতল দিয়া শৈলেশ্বর-মন্দিরে উঠিতে হয়। বিমলা বৃক্ষতল দিয়া যাইতে দেখিলেন যে, তথায় ষণ্ড নাই; বৃক্ষমূলে যে ধবল পদার্থ