ওস্মান খাঁ উত্তর করিলেন, “আমরা বীরেন্দ্রসিংহকে অনুনয় করিয়া দূত প্রেরণ করিয়াছিলাম। প্রত্যুত্তরে তিনি কহিয়াছেন যে, তােমরা পার সসৈন্যে দুর্গে আসিও।”
বিমলা কহিলেন, “বুঝিলাম, দুর্গাধিপতি আপনাদিগের সহিত মৈত্র না করিয়া, মােগলের পক্ষ হইয়াছেন বলিয়া, আপনি দুর্গ অধিকার করিতে আসিয়াছেন। কিন্তু আপনি একক দেখিতেছি।”
ওস্। আপাততঃ আমি একক।
বিমলা কহিলেন, “সেই জন্যই বোধ করি শঙ্কা-প্রযুক্ত আমাকে যাইতে দিতেছেন না।”
ভীরুতা অপবাদে পাঠান-সেনাপতি বিরক্ত হইয়া, তাঁহার গতি মুক্ত, করিয়া সাহস প্রকাশ করিলেও করিতে পারেন, এই দুরাশাতেই বিমলা এই কথা বলিলেন।
ওস্মান খাঁ ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন, “সুন্দরি! তােমার নিকট কেবল তােমার কটাক্ষকে শঙ্কা করিতে হয়; আমার সে শঙ্কাও বড় নাই, তােমার নিকট ভিক্ষা আছে।”
বিমলা কৌতূহলিনী হইয়া ওস্মান খাঁর মুখপানে চাহিয়া রহিলেন। ওস্মান খাঁ কহিলেন, “তােমার ওড়নার অঞ্চলে যে জানালার চাবি আছে, তাহা আমাকে দান করিয়া বাধিত কর। তােমার অঙ্গস্পর্শ করিয়া অবমাননা করিতে সঙ্কোচ করি।”
গবাক্ষের চাবি যে, সেনাপতির অভীষ্টসিদ্ধি-পক্ষে নিতান্ত প্রয়ােজনীয় তাহা বুঝিতে বিমলার ন্যায় চতুরার অধিককাল অপেক্ষা করে না। বুঝিতে পারিয়া বিমলা দেখিলেন, ইহার উপায় নাই। যে বলে লইতে পারে, তাহার যাচ্ঞা করা ব্যঙ্গ করা মাত্র। চাবি না দিলে সেনাপতি