হ্যাঁ, তিনি মা।
হাতের উপর উলকি দিয়ে নাম লেখা ছিল—
পার্ব্বতী কহিল, হ্যাঁ, কলকাতায় প্রথম গিয়ে লিখিয়েছিলেন।
একটা নীল রংয়ের আংটি—
পৈতার সময় জ্যাঠামশাই দিয়েছিলেন। আমি যাই—, বলিতে বলিতে পার্ব্বতী ছুটিয়া নামিয়া পড়িল।
মহেন্দ্র হতবুদ্ধি হইয়া কহিল, ও মা, কোথা যাও?
দেবদাদার কাছে।
সে তো আর নেই—ডোমে নিয়ে গেছে।
ওগো, মা গো! বলিয়া কাঁদিতে কাঁদিতে পার্ব্বতী ছুটিল। মহেন্দ্র ছুটিয়া সম্মুখে আসিয়া বাধা দিয়া বলিল, তুমি কি পাগল হলে মা? কোথা যাবে?
পার্ব্বতী মহেন্দ্রর পানে তীব্র কটাক্ষ করিয়া কহিল, মহেন, আমাকে কি সত্যি পাগল পেলে? পথ ছাড়।
তাহার চক্ষের পানে চাহিয়া, মহেন্দ্র পথ ছাড়িয়া নিঃশব্দে পিছনে পিছনে চলিল। পার্ব্বতী বাহির হইয়া গেল। বাহিরে তখনও নায়েব গোমস্তা কাজ করিতেছিল, তাহারা চাহিয়া দেখিল। চৌধুরীমহাশয় চশমার উপর দিয়া চাহিয়া কহিলেন, যায় কে?
মহেন্দ্র বলিল, ছোটমা।
সে কি? কোথায় যায়?
মহেন্দ্র বলিল, দেবদাসকে দেখতে।
ভুবন চৌধুরী চিৎকার করিয়া উঠিলেন, তোরা কি সব ক্ষেপে গেলি, ধর—ধর—ধরে আনো ওকে। পাগল হয়েচে! ও মহেন, ও কনেবৌ!
তাহার পর দাসী-চাকর মিলিয়া ধরাধরি করিয়া পার্ব্বতীর মূর্চ্ছিত দেহ টানিয়া আনিয়া বাটীর ভিতর লইয়া গেল। পরদিন তাহার মূর্চ্ছাভঙ্গ হইল,