নয়। দেখ, কতকগুলি নিরক্ষর, স্বার্থপর, অনভিজ্ঞ লোক লইয়া আমাদের নিত্য ব্যবহার করিতে হয়। ইহাদের কারও কোন কষ্ট না হয়, সকলে সুখী হয়, সেই ব্যবস্থা করিতে হইবে। এর চেয়ে কোন্ সন্ন্যাস কঠিন? এর চেয়ে কোন্ পুণ্য বড় পুণ্য? আমি এই সন্ন্যাস করিব।
সা। তবে কিছু দিন আমি তোমার কাছে থাকিয়া তোমার চেলা হইব।
যখন সাগরের সঙ্গে প্রফুল্লের এই কথা হইতেছিল, তখন ব্রহ্মঠাকুরাণীর কাছে ব্রজেশ্বর ভোজনে বসিয়াছিলেন। ব্রহ্মঠাকুরাণী জিজ্ঞাসা করিলেন, “বেজ, এখন কেমন রাঁধি?”
ব্রজেশ্বরের সেই দশ বছরের কথা মনে পড়িল। কথাগুলি মূল্যবান্—তাই দুই জনেরই মনে ছিল।
ব্রজ বলিল, “বেস্।”
ব্রহ্ম। “এখন গোরুর দুধ কেমন? বেগড়ায় কি?
ব্রজ। বেস্ দুধ।
ব্রহ্ম। কই, দশ বৎসর হলো—আমায় ত গঙ্গায় দিলি না?
ব্রজ। ভুলে গিছিলেম।
ব্রহ্ম। তুই আমায় গঙ্গায় দিস্ নে। তুই বাগ্দী হয়েছিস্।
ব্রজ। ঠান্দিদি! চুপ্ ও কথা না।
ব্রহ্ম। তা দিস্, পারিস্ ত গঙ্গায় দিস্। আমি আর কথা কব না। কিন্তু ভাই, কেউ যেন আমার চরকা টরকা ভাঙ্গে না।
চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ
কয়েক মাস থাকিয়া সাগর দেখিল, প্রফুল্ল যাহা বলিয়াছিল, তাহা করিল। সংসারের সকলকে সুখী করিল। শাশুড়ী প্রফুল্ল হইতে এত সুখী যে, প্রফুল্লের হাতে সমস্ত সংসারের ভার দিয়া, তিনি কেবল সাগরের ছেলে কোলে করিয়া বেড়াইতেন। ক্রমে শ্বশুরও প্রফুল্লের গুণ বুঝিলেন। শেষ প্রফুল্ল যে কাজ না করিত, সে কাজ তাঁর ভাল লাগিত না। শ্বশুর শাশুড়ী প্রফুল্লকে না জিজ্ঞাসা করিয়া কোন কাজ করিত না,