বিজ্ঞাপন
দেবী চৌধুরাণীর কিয়দংশমাত্র বঙ্গদর্শনে প্রকাশিত হইয়াছিল। এক্ষণে সম্পূর্ণ গ্রন্থ প্রকাশিত হইল।
“আনন্দমঠ” প্রকাশিত হইলে পর, অনেকে জানিতে ইচ্ছা প্রকাশ করিয়াছিলেন, ঐ গ্রন্থের কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি আছে কি না। সন্ন্যাসি-বিদ্রোহ ঐতিহাসিক বটে, কিন্তু পাঠককে সে কথা জানাইবার বিশেষ প্রয়োজনের অভাব। এই বিবেচনায় আমি সে পরিচয় কিছুই দিই নাই। ঐতিহাসিক উপন্যাস রচনা আমার উদ্দেশ্য ছিল না, সুতরাং ঐতিহাসিকতার ভাণ করি নাই। এক্ষণে দেখিয়া শুনিয়া ইচ্ছা হইয়াছে, আনন্দমঠের ভবিষ্যৎ সংস্করণে সন্ন্যাসি-বিদ্রোহের কিঞ্চিৎ ঐতিহাসিক পরিচয় দিব।
দেবী চৌধুরাণীরও ঐরূপ একটু ঐতিহাসিক মূল আছে। যিনি বৃত্তান্ত অবগত হইতে ইচ্ছা করেন, তিনি হণ্টর সাহেব কর্ত্তৃক সঙ্কলিত এবং গবর্ণমেণ্ট কর্ত্তৃক প্রচারিত বাঙ্গালার “Statistical Account” মধ্যে রঙ্গপুর জিলার ঐতিহাসিক বৃত্তান্ত পাঠ করিলে জানিতে পারিবেন। সে কথাটা বড় বেশী নয়, এবং “দেবী চৌধুরাণী” গ্রন্থের সঙ্গে ঐতিহাসিক দেবী চৌধুরাণীর সম্বন্ধ বড় অল্প। দেবী চৌধুরাণী, ভবানী পাঠক, গুড্ল্যাড্ সাহেব, লেফ্টেনাণ্ট ব্রেনান্, এই নামগুলি ঐতিহাসিক। আর দেবীর নৌকায় বাস, বরকন্দাজ, সেনা প্রভৃতি কয়টা কথা ইতিহাসে আছে বটে। এই পর্য্যন্ত। পাঠক মহাশয় অনুগ্রহপূর্ব্বক আনন্দমঠকে বা দেবী চৌধুরাণীকে “ঐতিহাসিক উপন্যাস” বিবেচনা না করিলে বড় বাধিত হইব।