ব্রজ। আমার কথাটা শোন, নইলে তোমার যত চরকা হবে, সব আমিই ভেঙ্গে দেব।
ব্রহ্ম। কি বল্ছ? চরকার কথা নয়?
ব্রজ। তা নয়—আমার দুইটি ব্রাহ্মণী আছে জান ত?
ব্রহ্ম। ব্রাহ্মণী? মা মা মা! যেমন ব্রাহ্মণী নয়ান বৌ, তেমনি ব্রাহ্মণী সাগর বৌ—আমার হাড়টা খেলে—কেবল রূপকথা বল—রূপকথা বল—রূপকথা বল। ভাই, এত রূপকথা পাব কোথা?
ব্রজ। রূপকথা থাক্—
ব্রহ্ম। তুমি যেন বললে থাক্, তারা ছাড়ে কই? শেষে সেই বিহঙ্গমা বিহঙ্গমীর কথা বলিলাম। বিহঙ্গমা বিহঙ্গমীর কথা জান? বলি শোন। এক বনে বড় একটা শিমুলগাছে এক বিহঙ্গমা বিহঙ্গমী থাকে—
ব্রজ। সর্ব্বনাশ! ঠাকুরমা, কর কি? এখন রূপকথা! আমার কথা শোন।
ব্রহ্ম। তোমার আবার কথা কি? আমি বলি, রূপকথা শুনিতেই এয়েছ—তোমাদের ত আর কাজ নাই?
ব্রজেশ্বর মনে মনে ভাবিল, “কবে বুড়ীদের ৺ প্রাপ্তি হবে।” প্রকাশ্যে বলিল, “আমার দুইটি ব্রাহ্মণী—আর একটি বাগ্দিনী। বাগ্দিনীটি না কি আজ এয়েছে?”
ব্রহ্ম। বালাই বালাই—বাগ্দিনী কেন? সে বামনের মেয়ে।
ব্রজ। এয়েছে?
ব্রহ্ম। হাঁ।
ব্রজ। কোথায়? একবার দেখা হয় না?
ব্রহ্ম। হাঁ। আমি দেখা করিয়ে দিয়ে তোমার বাপ মার দু চক্ষের বিয হই! তার চেয়ে বিহঙ্গমা বিহঙ্গমীর কথা শোন।
ব্রজ। ভয় নাই—বাপ মা আমাকে ডাকাইয়া বলিয়াছেন—তাকে তাড়াইয়া দাও। তা দেখা না পেলে, তাড়াইয়া দিব কি প্রকারে? তুমি ঠাকুরমা, তোমার কাছে সন্ধানের জন্য আসিয়াছি।
ব্রহ্ম। ভাই, আমি বুড়ো মানুষ—কৃষ্ণনাম জপ করি, আর আলো চাল খাই। রূপকথা শোন ত বল্তে পারি। বাগ্দীর কথাতেও নাই, বামনীর কথাতেও নাই।
ব্রজ। হায়! বুড়ো বয়সে কবে তুমি ডাকাতের হাতে পড়িবে!