পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্ৰজেশ্বর আঙ্গটি খুলিয়া দেখিতে দিল। সাগর হাতে লইয়া ঘুরাইয়া খুৱাইয়া দেখিল । বলিল, “ইহাতে দেবী চৌধুরাণীর নাম লেখা আছে।” । - 3 | कहे ? . . . . . . . সা। ভিতরে—ফারসীতে । ব্র । (পড়িয়া) এ কি এ ! এ যে আমার নাম—আমার আঙ্গটি ! সাগর ! তোমাকে আমার দিব্য, যদি তুমি আমার কাছে সত্য কথা না কও। আমায় বল, দেবী কে ? সা। তুমি চিনিতে পার নাই, সে কি আমার দোষ ! আমি ত এক দণ্ডে চিনিয়াছিলাম। ত্র। কে! কে ! দেবী কে ? সা। প্রফুল্ল । go আর ব্রজেশ্বর কথা কহিল না। সাগর দেখিল, প্রথমে ব্ৰজেশ্বরের শরীরে কাটা দিয়া উঠিল, তার পর একটা অনিৰ্ব্বচনীয় আহ্নাদের চিহ্ন—উচ্ছলিত মুখের তরঙ্গ, শরীরে দেখা দিল । মুখ প্রভাময়, নয়ন উজ্জল অথচ জলপ্লাবিত, দেহ উন্নত, কান্তি ফুৰ্ত্তিময়ী। তার পরই আবার সাগর দেখিল, সব যেন নিবিয়া গেল। বড় ঘোরতর বিষাদ আসিয়া যেন সেই প্রভাময় কান্তি অধিকার করিল। ব্রজেশ্বর বাক্যশূন্ত, স্পন্দহীন, নিমেষশূন্ত। ক্রমে সাগরের মুখপানে চাহিয়া চাহিয়া ব্ৰজেশ্বর চক্ষু মুদিল। দেহ অবসন্ন হইল ; ব্রজেশ্বর সাগরের কোলে মাথা রাখিয়া শুইয়া পড়িল। সাগর কাতর হইয়া অনেক জিজ্ঞাসাবাদ করিল। কিছুই উত্তর পাইল না ; একবার ব্রজেশ্বর বলিল, “প্ৰফুল্ল ডাকাত ! ছি!” ” দশম পরিচ্ছেদ ব্রজেশ্বর ও সাগরকে বিদায় দিয়া, দেবী চৌধুরাণী—হায়! কোথায় গেল দেবী ? কই সে বেশভূষা, ঢাকাই শাড়ী, সোনাদান, হীরা মুক্ত পান্না—সব কোথায় গেল ! দেবী সব ছাড়িয়াছে—সব একেবারে অন্তর্ধান করিয়াছে। দেবী কেবল একখানা গড় পরিয়াছে— হাতে কেবল একগাছা কড়। দেবী নৌকার এক পাশে বজরার শুধু তক্তার উপর একখানা চট পাতিয়া শয়ন করিল। ঘুমাইল কি না, জানি না। প্রভাতে বজরা বাঞ্ছিত স্থানে আসিয়া লাগিয়াছে দেখিয়া, দেবী নদীর জলে নামিয়া স্নান করিল। স্নান করিয়া ভিজা কাপড়েই রহিল—সেই চটের মত মোটা শাড়ী। কপাল ও বুক $: