পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় খণ্ড-চতুর্থ পরিচ্ছেদ , , هنه সকল দ্রব্য ছিপে তুলিয়া ফেলিল। তখন আরোহী রঙ্গরাজকে বলিল, “সব জিনিষ লইয়াছ— আর কেন দিক্‌ কর, এখন স্বস্থানে যাও।” রঙ্গরাজ উত্তর করিল, “যাইতেছি । কিন্তু আপনাকেও আমাদের সঙ্গে যাইতে হইবে।” ত্র। সে কি ? আমি কোথায় যাইব ? রঙ্গ । আমাদের রাণীর কাছে । ব্র । তোমাদের আবার রাণী কে ? রঙ্গ । আমাদের রাজরাণী । ব্র । তিনি আবার কে ? ডাকাইতের রাজরাণী ত কখন শুনি নাই । রঙ্গ। দেবী রাণীর নাম কখনও শুনেন নাই ? ত্র। ও হো ! তোমরা দেবী চৌধুরাণীর দল ? রঙ্গ। দলাদলি আবার কি ? আমরা রাণীজির কারপর্দাজ । ত্র । যেমন রাণী, তেমন কারপরদাজ ! ত, আমাকে রাণী দর্শনে যাইতে হইবে কেন ? আমাকে কয়েদ রাখিয়া কিছু আদায় করিবে, এই অভিপ্রায় ? রঙ্গ। কাজেই। বজরায় ত কিছু পাইলাম না। আপনাকে আটক করিলে যদি কিছু পাওয়া যায়। ব্র । আমারও যাইবার ইচ্ছা হইতেছে—তোমাদের রাজরাণী একটা দেখবার জিনিষ শুনিয়াছি । তিনি না কি যুবতী ? রঙ্গ। তিনি আমাদের ম–সন্তানে মার বয়সের হিসাব রাখে না । ত্র। শুনিয়াছি বড় রূপবতী । রঙ্গ। আমাদের মা ভগবতীর তুল্য। ব্র । চল, তবে ভগবতী-দর্শনে যাই । এই বলিয়া, ব্রজেশ্বর রঙ্গরাজের সঙ্গে কামরার বাহিরে আসিলেন। দেখিলেন যে, বজরার মাঝিমাল্লা সকলে ভয়ে জলে পড়িয়া কাছি ধরিয়া ভাসিয়া আছে । ব্রজেশ্বর তাহাদিগকে বলিলেন, “এখন তোমরা বজরায় উঠিতে পার—ভয় নাই । উঠিয়া আল্লার নাম নাও। তোমাদের জান ও মান ও দৌলৎ ও ইজৎ সব বজায় আছে! তোমরা বড় ছসিয়ার ” মাঝিরা তখন একে একে বজরায় উঠিতে লাগিল। ব্রজেশ্বর রঙ্গরাজকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখন আমার দ্বারবানদের বাধন খুলিয়া দিতে পারি কি ?”