পাতা:ধর্মমঙ্গল - রূপরাম.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छूमिका ১ ধৰ্ম্মঠাকুর ও তঁহার স্বরূপ ধৰ্ম্মঠাকুরের পূজা বাঙ্গালা দেশের নিজস্ব একটি প্রাচীনতম অনুষ্ঠান। আধুনিক সময়ে ইহা পশ্চিম বঙ্গে-অর্থাৎ বৰ্দ্ধমান বিভাগে-সীমাবদ্ধ। ভাগীরথীর খাত সরিয়া যাওয়ার ফলে পশ্চিম ও দক্ষিণ তীরের অনেকখানি অংশ এখন প্রেসিডেনলি বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হইয়াছে। এইসব অঞ্চলে ধৰ্ম্মঠাকুরের পূজা এখনও অবলুপ্ত হয় নাই। কিন্তু একদা যে এই পূজা সমগ্র বাঙ্গালা দেশে অজ্ঞাত ছিল না। তাহার প্রমাণ আছে। পূর্ব ও উত্তর বঙ্গে চৈত্র-সংক্রান্তিতে যে “দোল” (অর্থাৎ দেউল ) ও “পাট” পূজা হয় তাহ ধৰ্ম্মঠাকুরের গাজনের অনুষ্ঠান বিশেষের স্মৃতি বহন করিয়া আসিতেছে। বগুড়ায় যোগীর ভবনে ধৰ্ম্মঠাকুরের “গাদি” এখনও বৰ্ত্তমান । বাঙ্গালার পশ্চিম-উত্তর সীমাস্তের বাহিরেও ধৰ্ম্ম-পূজার ক্ষীণ চিহ্ন অবশিষ্ট আছে। বিহারে যে ‘ছটু-পরব” ( ষষ্ঠী-পৰ্ব ) ব্ৰত প্রচলিত আছে তাহার অনুষ্ঠানের সঙ্গে ধৰ্ম্মঠাকুরের পূজার কোন কোন অনুষ্ঠানের আশ্চৰ্য্য মিল আছে। পার্থক্যও কম বিস্ময়জনক নয়। ধৰ্ম্ম-পূজার সঙ্গে লাউ গাছের ও লাউ ফলের একটি বিশেষ সম্পর্ক ছিল। ছটু-পরবে ব্ৰতধারিণীকে ব্ৰতের দিনে লাউ খাইতে হয়, আর ধৰ্ম্মঠাকুরের গাজনে পুত্ৰৈষিণী ব্ৰতিনীকে লাউ খাইতে এবং লাউ গাছ পুতিতে নাই। কোন কোন স্থানের গাজনে লাউ-চার পোতা অনুষ্ঠানের একটি বিশিষ্ট অঙ্গ।” ধৰ্ম্মঠাকুবের গাজনে “সাঙ্গজাত” বা “সাংজাত”, ছটুপরবে “সঞ্জৎ’ । ধৰ্ম্মঠাকুরের সাহিত্যে যে বিশিষ্ট স্বষ্টিপিত্তন কাহিনী পাওয়া যাইতেছে তাহার সঙ্গে ঋগ্‌বেদের দশম মণ্ডলের ১২৯. সুক্তের সঙ্গে সবিশেষ ঐক্য আছে। আবার এই “নাসদীয়” সুক্তের সঙ্গে পলিনেশীয় জাতিদের বিশিষ্ট সৃষ্টিতত্ত্বের বিস্ময়াবহ সামঞ্জস্য আছে। ইহা হইতে এই অনুমান করা নিতান্ত অসঙ্গত হইবে না যে ধৰ্ম্ম-পূজার মৌলিক রূপ এদেশে অষ্ট্রিক জাতির দ্বারাই আমদানি হইয়াছিল। পরে ভারতবর্ষের এই পূৰ্ব্ব প্ৰান্তে আৰ্য ধৰ্ম্ম-অনুষ্ঠানের মিশ্রণে এই ক্ষীণ অনাৰ্য্য বীজ ধৰ্ম্মঠাকুরের পরিপুষ্ট ব্যক্তিত্বে ও ঘরভরা গাজনের সাড়ম্বর অনুষ্ঠানে পরিণত হইয়াছে। ১। শ্ৰীযুক্ত জয়কালী ভট্টাচাৰ্য লিখিত প্ৰবন্ধ দ্রষ্টব্য [[দৈনিক বসুমতী ২৫ তাত্র ১৩৫১ } ।