পাতা:ধূসর পান্ডুলিপি - জীবনানন্দ দাশ.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভরে উঠে উপেক্ষা করিয়া গেছে সাম্রাজ্যেরে, অবহেলা করে গেছে পৃথিবীর সব সিংহাসন— আমাদের পাড়াগাঁর সেই সব ভাঁড়— যদুবরাজ রাজাদের হাড়ে আজ তাহাদের হাড় মিশে গেছে অন্ধকারে অনেক মাটির নিচে পথিবীর তলে! কোটালের মত তারা নিঃশ্বাসের জলে ফরোয় নি তাদের সময় ; পৃথিবীর পরোহিতদের মত তারা করে নাই ভয়! প্রণয়ীর মত তারা ছেড়ে নি হাদয় ছড়া বেধে শহরের মেয়েদের নামে !— চাষাদের মত তারা ক্লান্ত হয়ে কপালের ঘামে কাটায়নি—কাটায়নি কাল! অনেক মাটির নিচে তাদের কপাল কোনো এক সম্রাটের সাথে মিশিয়া রয়েছে আজ অন্ধকার রাতে ! যোদ্ধা—জয়ী—বিজয়ীর পাঁচ ফুট জমিনের কাছে—পাশাপাশি— জিতিয়া রয়েছে আজ তাদের খালির অট্টহাসি! অনেক রাতের আগে এসে তারা চলে গেছে,—তাদের দিনের আলো হয়েছে অাঁধার, সেই সব গোয়ো কবি—পাড়াগাঁর ভাঁড়,— আজ এই অন্ধকারে আসিবে কি আর ? তাদের ফলন্ত দেহ শষে লয়ে জমিয়াছে আজ এই ক্ষেতেব ফসল ; অনেক দিনের গন্ধে ভরা ঐ ইন্দরেরা জানে তাহা—জানে তাহা নবম রাতের হাতে ঝরা এই শিশিরের জল । সে সব পে'চারা আজ বিকালেব নিশ্চলতা দেখে তাহাদের নাম ধ'রে যায় ডেকে ডেকে । মাটির নিচের থেকে তারা মতের মাথার স্বপেন ন'ড়ে উঠে জানায় কি অদ্ভূত ইসারা! অাঁধারের মশা আর নক্ষত্র তা জানে,— আমরাও আসিয়াছি ফসলের মাঠের আহবানে। সায্যের আলোর দিন ছেড়ে দিয়ে পথিবীর যশ পিছে ফেলে আসিয়াছি নেমে এই ক্ষেতে; শরীরের অবসাদ-হৃদয়ের জর ভুলে যেতে। EC