“দেখ শঙ্করদাস! যদি তুমি আমার পথ নিষ্কণ্টক করিতে পার, তবে তুমি যা বল, সব শুনিতে প্রস্তুত আছি।”
শঙ্কর কহিল,—“কেন না পারিব!”
শঙ্করদাস রাণীর প্রণয়-লাভাশায় গোড়াগুড়ি মনে মনে এক রকম উন্মত্ত—মাঝে মাঝে দুএকটা রসিকতার কথাও যে না বলিত, এমন নহে, রাণী তাহাতে অসন্তোষ বা বিরক্তিভাব বাহিরে কিছুমাত্র প্রকাশ করিতেন না। আজ রাণীর আশাব্যঞ্জক কথা শুনিয়া কহিল,—
“যাহা বলিবেন, এখনি করিতে প্রস্তুত আছি।”
রাণী। ঐ সন্ন্যাসীকে খুন।
শঙ্কর। কোন্ সন্ন্যাসী?
রা। যাহার সহিত বৈঠকখানায় কথা কহিয়া তৎক্ষণাৎ চলিয়া আসিলাম, দেখ নাই?
শ। দেখিয়াছি, সে কে?
রা। কেন, তুমি ঐ ভণ্ড তপস্বীকে কি চিনিতে পার নাই? আমি ওর ভয়ে কাশী এলুম, তবু ও আমার সঙ্গে সঙ্গে ফির্ছে, ওর নাম অমরচাঁদ, বড় বদমায়েস।
অমরচাঁদের নাম শুনিয়া শঙ্করদাস স্তম্ভিত হইল, জিজ্ঞাসিল,—
“অমরচাঁদকে চেনেন?”
রা। হাঁ, চিনি।
শ। অমরচাঁদ কি আপনার শত্রু?
রা। যদি এই পৃথিবীতে আমার কেহ শত্রু থাকে, তবে সে আমরচাঁদ।
শ। কেন—কারণ কি, শুনিতে পাই না?