পাতা:নকল রাণী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
দারোগার দপ্তর, ১৫৮ সংখ্যা।

র্দাহনে কমলার হৃদয় ব্যথিত—অতীত স্মৃতি আসিয়া হৃদয়ের গূঢ়তম প্রদেশে প্রবেশ করিল, জালা বাড়িল। শাস্তি—শান্তি ত নাই, তবে কি না সর্ব্বশক্তিমান্ ভগবান ভিন্ন কেউ বলিতে পারে না।

 বাষ্পগদগদরে কমলা আর বলিতে লাগিলেন,—“দেখ শঙ্কর! আমার পিতার আমিই একমাত্র সন্তান, তিনিও অতুল ঐশ্বর্য্যের অধিকারী ছিলেন, তাঁহার সমস্ত ধন আমি প্রাপ্ত হইয়াছি। আমার ধনের ইয়ত্তা নাই, লোকে যে আমাকে রাণী বলে, তা অনেক রাজা অপেক্ষা আমার ঐশ্বর্য্য বেশী, এমন কি আর—” বলিতে পারিলেন না।

 শঙ্করদাস এতক্ষণ পর্যন্ত নির্ব্বতনিষ্কম্প প্রদীপের গায় দাঁড়াইয়া কমলার কথাগুলি শুনিতেছিল, হঠাৎ চট‍্কা ভাঙ্গা মত হইয়া বলিল, “গত বিষয়ের উল্লেখ করিয়া আর দুঃখ প্রকাশ করিবার প্রয়োজন নাই। তবে বলিবার এইটুকু আছে যে, এত সঙ্গতির অধিকারিণী হইয়া একটা হাঘুরে সন্ন্যাসীকে ভয়?”

 কমলা বলিলেন, “ও কথা ত তোমাকে পূর্ব্বেই বলিয়াছি যে, এখনকার সে সময় নয়, আমাকে নিরাপদ কর, তখন—।”

 শ। নিরাপদ—নিরাপদ! তাহাকে অদ্যই জন্মের মত পৃথিবী হইতে বিতাড়িত করিব।

 রা। তাই হ'লেই হ’ল—যে দিন তুমি তার মৃতদেহ দেখাইতে পারিবে,—সেই দিন তৎক্ষণাৎ তোম।র সহিত—

 আর ভাল কথা, তুমি তাহাকে চিনিতে পারিবে? আজ সে ছদ্মবেশে সন্ন্যাসীর রূপ ধারণ করিয়া আমাদের এখানে আসিয়াছিল, তোমার পক্ষে তাহাকে চেনা বড়ই কঠিন হইরে।