পাতা:নকল রাণী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
দারোগার দপ্তর, ১৫৮ সংখ্যা।

যুবক কিছুমাত্র অসন্তোষ বা বিরক্তির ভাব প্রকাশ করিলেন না, কিছুমাত্র ক্রোধিত বা উত্তেজিত না হইয়া বরং হাস্য সহকারে কহিলেন,—“বেশ! বেশ! এবার সন্তষ্ট হইয়াছ ত—কাহাকে মারিয়াছ এখন বুঝিতে পারিবে? যার মস্তকের জন্য ৫০০৲ টাকা খেয়েছ, আমি সেই বদমায়েস অমরচাঁদ।”

 “তুমি—ভূ—মি—আ—পনি্ অমরচাঁদ—যাহাকে ডিটেক‍্টিভ পুলিসের কর্ম্মচারী বলিয়া সকলে সন্দেহ করে—আপনি সেই অমরচাঁদ!!” অমরচাঁদকে দেখিয়া শঙ্করের তেজ লোপ পাইল, শরীরের উষ্ণ শোণিত শীতল হইয়া গেল;—শঙ্কর স্থাণুবৎ।

 যুবক কহিলেন, “কি হে বীরবর! চুপ কর‍্লে যে, মুখে কথা নাই কেন? অমরচাঁদের মাথা কাট‍্তে বেরিয়েছ—এস, আর দেরী কেন, টপ্ করে কেটে ফেল? তোমার কাছে মারধোর ত খেলুম, অপমানটাও খুব কল্লে, জীবনে আমার আর সাধ নাই, তোমার হাতে মরণই মঙ্গল!!”

 অমরচাঁদের কথা শুনিয়া শঙ্কর অতিশয় লজ্জিত হইল। তখন অমরচাঁদ কহিলেন, “তোমার সহিত আমার অনেক কথা আছে, কোন নির্জ্জন স্থানে তোমার সহিত সাক্ষাৎ হইলে সকল কথা হইবে, সেই সময় ইচ্ছা করিলে আমাকে হত্যা করিয়া তোমার মনিবের মনস্কামনাও পূর্ণ করিতে পারিবে।”

 শঙ্কর এই প্রস্তাবে সম্মত হইল। পরদিবস রাত্রি ১১ টার সময় বরুণার ধারে—একটী ভগ্ন অট্টালিকায় উভয়ের নির্জ্জন সাক্ষাতের স্থান নির্দ্দিষ্ট হইল।