পাতা:নকল রাণী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ১৫৮ সংখ্যা।

মেধ ঘাটে উপস্থিত হইয়া দেখিলাম, সেইস্থানে আজ বড় ধূম, কেবল দীয়তাং ভুজ্যতাং। দশাশ্বমেধ ঘাটের ত্রিতল বাটী লোকে লোকারণ্য; যে যাহা খাইতে চাহিতেছে, সে অহা তৎক্ষণাৎ পাইতেছে। কাঙ্গাল গরিব দুই হাত তুলিয়া “জয় রাণী-মার জয়!” শব্দে দিক‍্দিগন্ত কাঁপাইয়া সহর্ষমনে চলিয়া যাইতেছে। বাহির-বাটীতে বড় ভিড়, কার সাধ্য সেই জনস্রোত ঠেলিয়া অগ্রসর হয়। কিন্তু এমনি বন্দবস্তের সহিত কার্য্য সমাধা হইতেছে যে, কাহাকেও বিশেষ কষ্টভোগ করিতে হইতেছে না। প্রাতঃকাল হইতে সমস্ত দিন প্রায়ই এইভাবে চলিল। এখন অপরাহ্ণ, বেলা ৫টা বাজে। শীতকাল। একে একে লোকজন জমিতে আরম্ভ হইল। সন্ধ্যা হয় হয়, এমন সময় আমি সেই জটাজুটধারী সন্ন্যাসীর সহিত সেই স্থানে উপস্থিত হইলাম। সন্ন্যাসীকে ভাল করিয়া দেখিলে প্রাচীন বলিয়া বোধ হয় না, জোর ৩৪৷৩৫ বৎসর বয়ঃক্রম হইবে। কেন না, সেই অন্ধকারের সমষ্টি শ্মশ্রুগুম্ফ ও জটাভার এখনও শেত বর্ণ ধারণ করে নাই—যেমন তেমনই রহিয়াছে। সন্ন্যাসী বহির্বাটীর দ্বারবানকে জিজ্ঞাসা করিলেন,—“ওহে বাপু! তোমাদের রাণীজীর নাম শুনিয়া, অনেকদূর হইতে আসিয়াছি, একবার তাঁহার সহিত দেখা করা আবশ্যক।”

 দ্বারবান কহিল,—“আজ্ঞে! হাঁ! কেন না দেখা হইবে! অবশ্যই হইবে।”

 সন্ন্যাসী।—তুমি যে বেশ লোক হ্যা, কৈ, তুমি ত আমাকে রাজবাটীর দরওয়ানের মত চোক দুটী লাল করিয়া কথা কহিলে না?”