পাতা:নদীয়া-কাহিনী - কুমুদনাথ মল্লিক.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

নদীয়া-কাহিনী । ১৮৫৯ অক্ষে সদাশয় গারজন পীটার গ্র্যান্ট মহাশয় বঙ্গেশ্বররূপে এদেশের শাসনভার হন্তে লয়েন । এ সময়ে নদীয়া ও যশোহর জেলার বহু প্রজা ও জমিদারবর্গের সহিত অনেক অত্যাচারী নীলকরের, প্রকাশ্যভাবে বিবাদ বাধিয়া উঠে এবং লক্ষ লক্ষ প্রজা ধর্ম্মঘট করিয়া প্রতিজ্ঞারূঢ় হয় যে আর নীলের দারুন - লইবে না বা নীলের চাষ করিবে না; সুতরাং ঐ বিষয়ে তখন মহাযা গবর্ণমেন্টের হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন হইয়া উঠে। ৮২ থাকিলেও মনোহর মৃত্তিকার উপরে হস্ত পদের ভর করিয়া বাঁশ সমেত সেই দুই জনকে লইয়া উঠিয়া দাঁড়াইতে পারিত নয়না, মানিক৷ প্রভৃতি তাহার সময়ের নদীয়ার অন্যতম দস্যু নায়ক। সমগ্ৰ নদীয়া জেলা এই দলপতিত্রয়ের কার্যক্ষেত্র ছিল। ইহারা তখন এতদূর অকুতোভয় হইয়া উঠিরাছিল যে অন্য লোকের কথা দূরে থাকুক ইহারা কয়েকবার কৃষ্ণনগরের সাহেব দিগের মেস কোর্টের ও জজ ব্রাউন সাহেবের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বোঝাই নৌকা লুট করিতেও কুণ্ঠিত হইত না । মনোহর অন্তত্র যাহাই করুক নিজ গ্রামে কখন সে চুরী বা ডাকাতি করে নাই। মনোহর তাহার জীবনে যে কত ভীষণ ডাকাতি কাৰ্য্য সমাধা করিয়াছে তাহার ইয়ত্তা নাই, যাহা হউক পরিশেষে সে শাস্তিপুরের (বর্তমান রাণাঘাট)সবডিভিসনের ডেপুটী বাবু ঈশ্বরচন্দ্র ঘোষাল এবং কৃষ্ণনগরের ম্যাজিষ্ট্রেট মণ্টেশ্বর সাহেব বাহাদুরের যত্নে ও নদীয়ার কর্মদক্ষ দারোগা বাবু গিরীশচন্দ্র বসুর চেষ্টা ও অসমসাহসিক ভায় এবং তাহার নিজ মাতুলের বিশ্বাসঘাতকতার ধৃত হইয়া তাহার আজন্মকৃত পাপের প্রায়শ্চিত্ত বিধান করে। সঙ্গে সঙ্গে মনোহরের সঙ্গীদেরও রাজদণ্ড হয়। ইহাদের মধ্যে পূর্ব্বস্থলীর গোগাল পোদ্দার বিশেষ প্রসিদ্ধ, সে মনোহরের “থাঙ্গিদার” অর্থাৎ মাল সামালদার ছিল। জজ ব্রাউনের বিচারে মনোহরের চিরনির্ব্বাসন দণ্ড হয় তদানীগুন রীত্যানুসারে এই আদেশ সার নিজামত হইতে কায়েম হইয়া আসিলে মনোহর আলিপুর জেলে প্রেরিত হয় তথা হইতে কয়েকমাস পরে ৫০/৬০ জন পঞ্জাবী ও পশ্চিমে দায়মালী আসামীর সহিত নির্বাসনের জন্ম ব্রহ্মদেশে খায়েটমিউ নগরে ক্লারিসা নামক জাহাজে চালান হয়। সমুদ্র মধ্যে মনোহর তাহার সঙ্গী কয়েদীদের সহিত এক ৰোগে মহাবিপ্লব বাধাইয়া জাহাজের কাপ্তেন ও অন্তার সাহেবকে অসতর্ক অবস্থায় পাইয়া বধ করে। কেবল জাহাজ চালাইবার জন্ম কয়েকজন দেশী খালাশীর প্রাণরক্ষা করিয়া তাহাদের দ্বারায় ভিন্ন রাজার এলেকার জাহাজ চালাইয়া পালাইতে চেষ্টা করে। কিন্তু তাহাদের দুর্ভাগ্যবশতঃ একখানা রণতরীর সহিত সাক্ষাৎ হওয়াতে সেই মানোয়ারের