পাতা:নদীয়া-কাহিনী - কুমুদনাথ মল্লিক.pdf/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S3R. नयीक्षा काहिनी। বসিয়া থাকিতে পারিলেন না, বলিলেন-‘নদীয়ার রাজার পণ্ডিতটা একটা বুজরুক, কেন না। আমি মৌলবী সাহেবের পত্রেও জানিতে পারিয়াছি-দিল্লীর পঞ্জিকায় লেখা আছে, “৭টা রাত্রির সময় গ্ৰহণ লাগিবে, ১১টার সময় ছড়িবে এবং পুর্ণাগ্রাস হইবে।” সেই গ্ৰহণ হইল না। আর বসিয়া থাকিয়া কি হইবে, চল আমরা শুইতে যাই।” নবাব শয়ন করিতে গেলেন, মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের হৃদয় আনন্দে পুলকিত। তঁহার এত আনন্দ হইয়াছে যে, বিনিদ্র অবস্থায়ই তিনি রাত্ৰি কাঁটাইলেন। এদিকে জনপ্রাণিবিহীন গঙ্গাগর্ভে মাঘমাসের দারুণ হিম-পাতেও অটলদেহ রােমরুদ্রবিদ্যানিধি নাসাঁগ্রে দৃষ্টিপাত করিয়া ইষ্টমন্ত্র জপ করিতেছেন। আর রাত্রি নাই, রজনীর বিচ্ছেদ স্মরণ করিয়া নিশানাথের মুখ পাণ্ডুবৰ্ণ হইয়া আসিল। ক্ষীণজ্যোতি নক্ষত্ৰসকলও ক্ৰমে ক্ৰমে কোন অজানা প্রদেশে লুকাইতে লাগিল। বিদ্যানিধি জপ শেষ করিয়া গাত্ৰোখান করিলেন। তিনি শিব পাঁচটি গঙ্গাস্রোতে বিসর্জন করিয়া তাম্রাধারটি তুলিলেই সেই প্রভাতকালে পৃথিবী যেন ধূসর বস্ত্রে আচ্ছাদিত হইল। নবাব শয্যা ত্যাগ করিয়া দেখিলেন গ্ৰস্তান্ত চন্দ্ৰেৱ ছায়া আকাশপটে বিলীন হইতেছে। যখন, বিদ্যানিধি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্ৰেয় বাসায় আগমন করিলেন, তখন মহারাজ হাত বাড়াইয় তাহাকে আলিঙ্গন করিলেন এবং বলিলেন “বিদ্যানিধি তুমি আমার মুখ উজ্জ্বল করিয়াছ, আজ আমি যথার্থ নবদ্বীপের পণ্ডিতের রাজা।” যথাসময়ে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র সপরিষদ নবাবের দরবারের উপস্থিত হইলেন। সেদিন নবাবের দরবারের সমস্ত রাজা, জমিদার, আমির ওমরাহের দৃষ্টি রাজার দিকে পড়িল। সকলেই বিদ্যানিধিকে দেখিবার জন্য উৎসুক। বিদ্যানিধি, গৌরাঙ্গদেহ তেজঃপুঞ্জ-কলেবর গরদের ধুতি উত্তরীয় দ্বারা দেহ আবৃত করিয়া মহারাজের পার্থে উপবিষ্ট হইলেন । নবাৰ, জ্যোতিঃশাস্ত্র ও যোগ সম্বন্ধে অনেক প্রশ্ন করিলেন এবং বিদ্যানিধির উত্তরে অতিশয় সন্তুষ্ট হইলেন। তাহার পর, প্রকাশ্য দরবারে বিদ্যানিধির প্রশংসা করিয়া পুরস্কার প্রার্থনা করিতে অনুরোধ করিলেন। বিদ্যানিধি বলিলেন,-“খোদাবন্দী! মহারাজের অভীষ্ট্রের সহিত আমার অতীটের কোনই পার্থক্য নাই। অতএব মহারাজকে সন্তুষ্ট করিলেই আমি পরম সন্তোষ লাভ করিব।” প্রভুর প্রতি এইরূপ আকৃত্রিম প্ৰীতি দেখিয়া নিবাৰ অত্যন্ত পরিতুষ্ট হইলেন এবং বাকী রাজস্ব রেহাই দিয়া সে যাত্রী