পাতা:নদীয়া-কাহিনী - কুমুদনাথ মল্লিক.pdf/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ve32 नीशा-काश्निी । পরিচয় পাওয়া যায়। কথিত আছে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের দরবারে কাহাকেও পরিচিত হইতে হইলে এই বংশীয়গণের শুভ দৃষ্টি ব্যতীত সে কাৰ্য্য সম্পাদিত হইতে পারিত না। এই সময়ে কৃষ্ণনগরের আর একটী উল্লেখযোগ্য ঘটনার সহিত মল্লিকবংশের নাম বিজড়িত দেখা যায়। সেটী মল্পিকদিগের বারোইয়ারী পূজা। কথিত আছে। এরূপ সমারোহে বারোইয়ারী পুজা বঙ্গদেশে আর কখনও হয় নাই। স্বয়ং মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্ৰ এই কাৰ্য্যের অধ্যক্ষ হইতেন। এই বারোইয়ারী মণ্ডপে মাতা দশভূজার সম্মুখে প্রতি বৎসর লক্ষ বলি প্ৰদান করা হইত। এই সময়েই এই বংশীয় কতিপয় উদ্যমশীল যুবক ঢাকা, শাস্তিপুর প্রভৃতি বহু প্ৰসিদ্ধ স্থান হইতে বহু মুদ্রার সুন্ম মসলিন সংগ্ৰহ করিয়া ইউরোপে প্রেরণ করিতে লাগিলেন। ক্রমে এই ব্যবসায়ে উন্নতি হইলে, তাহারা ঢাকা, এনাতগঞ্জ, কলিকাতা ও শান্তিপুর প্রভৃতি স্থানে অনেকগুলি কাপড়ের আড়ত খুলিয়া দেন এবং রাণাঘাটে একটা নীলকুঠিী স্থাপনা করেন। এই সময়ে বস্ত্ৰ ব্যবসায়ে তাহদের এতই উন্নতি হইয়াছিল যে কথিত আছে তাহদের বাটীর সামান্য দাসদাসী পৰ্য্যন্ত সর্বদা ঢাকাই সুন্ম বস্ত্ৰ পরিধান করিয়া থাকিত । এই সকল আড়াতের মধ্যে শান্তিপুর এবং কৃষ্ণনগরের সন্নিধ্য বলিয়া রাণাঘাটের আড়তেই তেঁাহারা অধিক ভরাভর করেন এবং মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের লোকান্তর হইলে এই বংশীয় পরম ভাগবত হরেকৃষ্ণ মরিক মহাশয় কৃষ্ণনগরের বাস পরিত্যাগ করিয়া সপরিবারে রাণাঘাটে আসিয়া বাসস্থান নিৰ্ম্মাণ করেন । রাণাঘাটের সিদ্ধেশ্বরী তলায় সুবৃহৎ বাসবাটী নিৰ্ম্মাণ করিয়া তাহারা যেরূপ সমৃদ্ধির সহিত বারোমাসে তের পার্বণের অনুষ্ঠান করিতে থাকেন তাহ রাণাঘাটে ৷আজিও প্রবাদের ন্যায় হইয়া আছে। রাণাঘাটে পালচৌধুরীগণের প্রাদুর্ভাবও এই সময়ে। কৃষ্ণপান্তী, আপনার অসাধারণ অধ্যবসায়, সরল হৃদয় ও উন্নত চরিত্র বলে যে কুবের তুল্য ঐশ্বৰ্য্য উপার্জন করিয়া গিয়াছিলেন, তঁহার মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই তদীয় বংশের কেহ কেহ বিষয়মদে মত্ত হইয়া উহার অপব্যবহার আরম্ভ করেন । এবং ধনমদে মত্ত হইয়া দারূণ পরশ্ৰী কাতর হইয়া উঠেন এবং মল্লিকদের 'সহিত সর্বদা নানামতে কলহের সুত্রানুসন্ধান করিতে থাকেন। একে তখন ভারতীয় বস্ত্রশিল্পের অবনতির সূত্রপাত হওয়ায় মরিকবংশীয়গণ ব্যবসায় লইয়া ব্যতিব্যস্ত, তাহাতে পালচৌধুরীদিগের এই অমানুষিক বিদ্বেষে উত্ত্যক্ত ও বিরক্ত হই।