পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম পরিচ্ছেদ > Sము দিন অপরাহ্নেই সে নওরোজির নিকট এই প্রস্তাব উত্থাপিত করিল। নওরোজি প্রথমে এই অনুগ্রহ গ্রহণে অসম্মত হইয়াছিলেন, কিন্তু সারল্যের প্রতিমা-স্বরূপিণী সহৃদয়া কর্ণেলিয়াকে ব্যথিত করিবার শক্তি র্তাহার ছিল না ; অগত্য র্তাহাকে এই প্রস্তাবে সম্মত হইতে হইল । আহার উপলক্ষে বৃদ্ধার গৃহে যাতায়াতে দুই চারি দিনের মধ্যে র্তাহার সহিত নওরোজির পরিচয় হইয়া গেল ; কিন্তু বৃদ্ধ প্রথম-প্রথম তাহাকে অনুকুল চক্ষে দেখেন নাই। যাহারা ঘরদরজা চিত্রিত করে, কায়িক পরিশ্রম করিয়া অর্থোপার্জনে বাধ্য হয়, তাহারা যে ভদ্রলোক হইতে পারে, সন্ত্রাস্তবংশীয় ঐশ্বৰ্য্যশালিনী বৃদ্ধ একথা কল্পনা করিতেও পারিতেন না । তিনি নওরোজির সহিত যে দুই চারিটি কথা কহিতেন, তাহাতে তাহার অন্তরের আজন্মপোষিত কুসংস্কার ও অবজ্ঞা পরিস্ফুট হইয়া উঠিত। এই অবজ্ঞা নওরোজির পক্ষে অত্যন্ত মৰ্ম্মাস্তিক হইত ; কিন্তু তিনি তাহার আন্তরিক কষ্টের কথা কাহারও নিকট প্রকাশ করিতেন না । () চিত্রবিদ্যায় নওরোজির সুন্দর দক্ষতা জন্মিয়াছিল, তিনি কয়েক দিনের পরিশ্রমে বৃদ্ধার একখানি অতি সুন্দর তৈলচিত্র অঙ্কিত করিয়া র্তাহাকে উপহার দিলেন । চিত্ৰখানি এতই স্বাভাবিক ও হৃদয়গ্রাহী হইয়াছিল যে, তাহ দেখিয়া পিসিম বুঝিলেন, ঈশ্বরদত্ত ক্ষমতা না থাকিলে, কেহ এরূপ চিত্র অঙ্কিত করিতে পারে না। সেই দিন হইতে পিসিমা নওরোজিকে ভিন্ন চক্ষে দেখিতে লাগিলেন, এবং পুরস্কার স্বরূপ র্তাহাকে একটি মূল্যবান সোনার ঘড়ি উপহার দিলেন।—কর্ণেলিয়ার আনন্দের সীমা রহিল না। ■