পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o *-, ^. চতুর্দশ পরিচ্ছেদ > 0 } কর্ণেলিয়ার এই শেষ কথায় তাহার সংযমের বাধ ভাঙ্গিয়া গেল ; তিনি বসিয়াছিলেন, সবেগে উঠিয়া দাড়াইলেন ; তাহার সুগোল মুখমণ্ডল এক মুহূর্তে আরক্তিম হইয়া উঠিল। কিন্তু অল্পক্ষণের মধ্যেই তাহার সেই উত্তেজিত ভাব অপগত হইল, তাহার মুখ পাংশুবর্ণ ধারণ করিল, তাহার কণ্ঠরোধ হইল, নিৰ্ব্বাক ভাবে তিনি কর্ণেলিয়ার মুখের দিকে চাহিয়া রহিলেন । কিন্তু র্তাহার এইরূপ ভাব পরিবর্তন দেখিয়াও কর্ণেলিয়া নিরস্ত হইল না, বিন্দু মাত্র ইতস্ততঃ না করিয়া দৃঢ়স্বরে বলিল, “হঁ। আমি আর একজনকে ভাল বাসিয়াছি। যাহাকে আমি হৃদয় সমর্পণ করিয়াছি আমার পিতা মাতার সহিত র্তাহার পরিচয় নাই । তিনি তাহাদের পরিচয়ের যোগ্য ব্যক্তি নহেন, কিন্তু তথাপি স্বীকার করিতেছি—এই যুবকই আমার প্রাণেশ্বর। আমার এ কথা শুনিয়া আপনি আমার উপর বিরক্ত হইবেন না ; আপনার সহিত আমার পরিচয় হইবার বহু পূৰ্ব্ব হইতেই সেই যুবককে আমি প্রাণের সহিত ভালবাসি। আমার এই প্রিয়তম, আমার এই প্রাণের দেবতা ঐশ্বৰ্য্যে বা পদগৌরবে আপনার ছায়া স্পর্শেরও যোগ্য নহেন। আপনি যে সমাজের চূড়ায় উপবিষ্ট আছেন, তিনি তাহার সোপানপ্রাস্তে এখন ধুলায় লুটাইতেছেন। আপনি সন্ত্রাস্ত বংশোদ্ভব, ধনাঢ্য ব্যক্তি ; তিনি দরিদ্র শ্রমজীবি মাত্র ; আপনি লক্ষপতি, আর র্তাহাকে জীবিকার জন্য প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করিতে হয় ! কিন্তু আমি জানি,আমি বিশ্বাস করি,প্রতিভার অরুণকিরণে র্তাহার ললাট দীপ্যমান, তাহার উজ্জ্বল প্রতিভালোকে একদিন ভারতের আকাশ পূর্ণ হইবে।”