পাতা:নন্দনে নরক - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৩১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ {DS S) ধনধানের গৃহে আপনার জন্মই বৃথা !—কিন্তু আমার সাক্ষাতে যখনই কেহ এ কথা বলিয়াছে, তখনই আমি সে কথার প্রতিবাদ করিয়া বলিয়াছি, বায়রামজি সাহেবের যে ভোগবিলাসে প্রবৃত্তি নাই, ইহা র্তাহার পক্ষে গৌরবেরই কথা ; নিতান্ত অপদার্থ না হইলে আর কে ভোগ বিলাসে, জুয়ায় ও মেয়ে মানুষে টাকা নষ্ট করে ?” এবার বায়রামজি কথা কহিল, বলিল "আমার হাতে টাকা থাকিলে আমিও তাহা ভোগবিলাসে উড়াইতাম ; আমার অর্থাভাবকে তুমি আমার সংযমের লক্ষণ বলিয়া ভুল করিও না।” ওস্তাদের ভাটার ন্যায় চক্ষু দুটি এ কথায় যেন জ্বলিয়া উঠিল, সে বুবিল, তাহার নিক্ষিপ্ত শর ব্যর্থ হয় নাই, তাহা অপোগণ্ডের মৰ্ম্মভেদ করিয়াছে । ওস্তাদ মৃদুস্বরে বলিল, “কতকগুলা বাবা যেন একেবারে কসাই ! তাহাদের হাতে অগাধ টাকা, কিন্তু ছেলের হাতে একটা পয়সা দিতে তাহাদের মাথায় বজ্রাঘাত হয় ?” বায়রামজি কোন মতামত প্রকাশ করিল না ; ওস্তাদ বুঝিল, কথাটা বায়রামজির অপ্রীতিকর হয় নাই। সে উৎসাহের সহিত বলিতে লাগিল, “অনেক বাপেরই স্বভাব এই রকম ; বুড় বয়সে যখন মাথায় টাক পড়িয়া যায়, দন্ত গুলিত ও চৰ্ম্ম লোল হয়, দৃষ্টি শক্তি কমিয়া যায়, তখন আর তাহাদের যৌবনের কুকার্য্যের কথা স্মরণ হয় না ; তখন তাহারা মনে করে, যুবকগণের পক্ষে যৌবন-সুলভ আমোদ প্রমোদ বড় অন্যায়। বিশ পঁচিশ বৎসর বয়সের সময় এজরা সাহেবের মতিগতি কিরূপ ছিল, তাহা তাহার বাল্য বন্ধুগণের অজ্ঞাত নহে ।”