नदक्षिांम ¢ኳሙ না। এই কথা মনে করিয়া তাহার যখনই কষ্ট হইত, তখনই এই বলিয়া তিনি আপনাকে আপনি সাম্ভনা দিতেন যে, উষা নিজের প্ৰতি অনাদর অবহেলা, সহিয়াছিল, কিন্তু স্বামী যখন তাহার ধৰ্ম্মাচরণে ঘা দিল, সে-আঘাত সে সহিল না। বোধ করি এইজন্যেই বহুদিন পরে একদিন যখন তাহার স্বামিংগৃহে ডাক পড়িল, তখন এতটুকু দ্বিধা, এতটুকু অভিমান করে নাই, নিঃশব্দে এবং নির্বিচারে ফিরিয়া আসিয়াছিল। হিন্দু রমণীর এই ধৰ্ম্মাচরণ বস্তুটির সহিত সংস্কারমুক্ত ও আলোকপ্ৰাপ্ত ক্ষেত্রমোহনের পরিচয় ছিল না ; এখন নিজের বাড়ীর সঙ্গে তুলনা করিয়া, আর একজনের বিশ্বাসের দৃঢ়তা ও আপনাকে বঞ্চিত করিবার শক্তি দেখিয়া ভঁৰ্তাহার নিজেদেব সমস্ত সমাজটাকেই যেন ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ মনে হইত। তিনি মনে মনে বলিতেন, এতখানি সত্যকার তেজ ত আমাদের কোন মেয়ের মধ্যেই নাই। তাহার আশঙ্কা হইত, বুঝি এই সত্যকার ধৰ্ম্ম-বস্তুটাই তাদের মধ্য হইতে নির্বাসিত হইয়া গেছে। যে-বিশ্বাস আপনাকে পীড়িত করিতে পিছাইয়া দাড়ায় না, শ্রদ্ধার গভীরতা যাহার দুঃখ ও ত্যাগের মধ্য দিয়া আপনাকে যাচাই করিয়া লয়, এ-বিশ্বাস কই বিভার ? কই উমার ? আরও সে ত অনেককেই জানে, কিন্তু কোথায় ইহার তুলনা ? ইহারই অনুভূতি একদিকে সঙ্কোচ ও আর একদিকে ভক্তিতে র্তাহার সমস্ত অন্তর যেন পরিপূর্ণ করিয়া দিতে থাকিত। কারণ, এই কয়টা দিনেই মধ্যেই স্বামীকে যে উষা কতখানি ভালবাসিয়াছিল, এ-কথা ত তাহার অবিদিত ছিল না । আবার পরীক্ষণেই যখন মনে হইত, সমস্ত ভাসিয়া গিয়া এতবড় কাণ্ড ঘটিল। কিনা। শুধু একজন মুসলমান ভূত্য লইয়া-যে আচার সে পালন করে না, বাটীর মধ্যে তাহারই পুনঃপ্রচলন একেবারে তাহাকে বাড়ীছাড়া করিয়া দিল। অপূরে যাই কেন-না করুক, কিন্তু বৌঠাকরুণকে স্মরণ করিয়া ইহারই সঙ্কীর্ণ তুচ্ছতায় এই লোকটি যেন একেবারে বিস্ময় ও ক্ষোভে অভিভূত হইয়াঁপড়িতেন।
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।