পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(V नदविश्थांन কল্পনায় তাহাকে অতিশয় আকর্ষণ করিত । এইজন্যই চোখের উপরে অকস্মাৎ উষাকে পাইয়া তিনি মুগ্ধ হইয়া গিয়াছিলেন ; তাহারই আচরণে আজ সকলের কাছে তঁহার মাথা হেঁট হইয়া গেছে। এই বধুটিকে কেন্দ্ৰ করিয়া তিনি যে শিক্ষা ও সংস্কারের কথা আত্মীয়-পরিজন-মধ্যে মেয়েদের কাছে সগর্বে বার বার বলিতেন, সেইখানেই ঊৰ্তাহার অত্যন্ত আঘাত লাগিয়াছে। নিজের জন্য উষা নিজেই শুধু দায়ী, তাহার অন্যায়। আর কিছুই স্পর্শ করে নাইকরিতেই পারে না, এই কথাটা তিনি জোর দিয়া বলিতে চাহিলেও মুখে তাহার বাধিয়া যাইত। তাই স্ত্রী চলিয়া গেলে, তিনি উমার কাছে জবাবদিহির মতই সন্দিগ্ধ-কণ্ঠে বলিতে লাগিলেন, গোড়ামি সকল জিনিষেরই মন্দ, এ আমি অস্বীকার করিনে উমা-হিন্দুয়ানীর এই গলদটাই ঘুচানো চাই ; কিন্তু আমরা যে আরও মন্দ, এ-কথা অস্বীকার করলে তা আরও অন্যায় হবে । দাদা ও বৌদিদির বাদ-বিতণ্ডার আলোচনায় উমা চিরদিনই মৌন হইয়া থাকিত, বিভার অনুপস্থিতিতেও তাই এখনও নিরুত্তরে বসিয়া রহিল । সেই রাত্রে ছাপরা যাইবার পুর্বে ক্ষেত্ৰমোহন বিভাকে ডাকিয়া কহিলেন, আমার ফিরতে বোধ করি চার-পাচদিন দেরী হবে, ইতিমধ্যে ভবানীপুরের ওঁদের কারও সঙ্গে যদি দেখা হয়, ব’লে শৈলেশকে সম্মত করতে আমি পারব। বিভা জিজ্ঞাসা করিল, বৌঠাকরুণ তা হ’লে আর ফিরবেন না ? ক্ষেত্ৰমোহন বলিলেন, না । যতই ভাবচি, মনে হচ্ছে শৈলেশের চেয়ে তঁর অপরাধই বেশী। তুমি ঠিক কথাই বলেচা। যে-শিক্ষায় মানুষকে এতবড় সঙ্কীর্ণ এবং স্বার্থপর করে তোলে, সে-শিক্ষার মূল্য এককালে যতই থাক এখন আর নেই, অন্ততঃ আমাদের মধ্যে তার আর পুনঃ-প্ৰচলনের আবশ্যকতা নেই। তাই বটে। বৌঠাকরুণের আচার-বিচারের বিড়ম্বনাই ছিল, বস্তু কিছু ছিল না। থাকলে