नयदेिशांम ዓ 8 আজ তথায় মান-অভিমানের স্থান হইল না, সহজেই সম্মত হইয়া বলিল, চল । উমাকে আজ তাহারা সঙ্গে লইল না। এই মেয়েটির সম্মুখে লজ্জার মাত্ৰাট আজ আর তাহাদের বাড়াইবার প্রবৃত্তি হইল না। য়খন তাহাদের মোটর শৈলেশের বাড়ীর সামনে আসিয়া থামিল, তখন বেলা দশটা বাজিয়া গেছে। বাহিরের ঘরটা আজি খোলা, গুরুভাই-যুগল মেঝের উপরে বসিয়া বড় পুটলি কষিয়া বঁধিতেছেন। ক্ষেত্রমোহন জিজ্ঞাসা করিলেন, শৈলেশবাবু বাড়ী আছেন ? র্তাহারা মুখ তুলিয়া চাহিলেন। একটুখানি চুপ করিয়া থাকিয়া কি ভাবিয়া শেষে উত্তর দিলেন, না, তিনি পরশু গেছেন নবদ্বীপধামে । কবে ফিরবেন ? কাল কিম্বা পরশু সকালে । বাবুর ছেলে বাড়ীতে আছে ? তঁহারা উভয়েই ঘাড় নাড়িয়া জানাইলেন-আছে এবং তৎক্ষণাৎ কাজে লাগিয়া গেলেন । অতঃপর বাটীর মধ্যে প্ৰবেশ করিয়া দু’জনের একসঙ্গেই চোখে পড়িল, লাইব্রেরী-ঘরের দ্বারে সেই পুরানো ভারী পর্দাটা আক্ত আবার ঝুলিতেছে। একটু ফাক করিতেই চােখে পড়িল, পূর্বের আসবাবপত্র যথাস্থানে সমস্তই ফিরিয়া আসিয়াছে। বিভা কহিল, ওই দুটো লোককে সরিয়ে দিয়ে দাদা আবার ঘরটার শ্ৰী, ফিরিয়েচেন । এটুকু সুবুদ্ধিও যে তার আবার কখনও হবে, আমার আশা ছিল না । কিন্তু বলা তাহার শেষ না হইতেই সহসা পিছনে শব্দ শুনিয়া ফিরিয়া চাহিতেই উভয়ে বিস্ময়ে একেবারে বাকশূন্য হইয়া গেলেন। সোমেন বাহিরে কোথাও গিয়াছিল, রবারের একটা বল লুফিতে লুফিতে আসিতেছে। কোথায়-বা মালা, কোথায়-বা টিকি, আর কোথায়-বা তাহার ব্ৰহ্মচারীর বেশ। খালি গা, কিন্তু পরণে চমৎকার লাল-পেড়ে জরি বসানো ধুতি-মাথার চুল
পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।