পাতা:নববিধান - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नदक्षेिथांन 8. মেয়েকে শ্বশুরালয়ে পাঠাইতে সম্মত হইলেন না। শৈলেশ প্রবাসে থাকিতেই এইসকল ব্যাপারের কিছু কিছু শুনিয়াছিল ; ভাবিয়াছিল বাড়ী গেলেই সমস্ত ঠিক হইয়া যাইবে । কিন্তু বছর-চারেক পরে যখন যথার্থ-ই বাড়ী ফিরিল, তখন তাহার স্বভাব ও প্ৰকৃতি দুই-ই বদলাইয়া গিয়াছে । অতএব আর একজন বিলাত-ফেরতের বিলাতী। আদিবাকায়দা-জানা বিদুষী মেয়ের সহিত যখন বিবাহের সম্ভাবনা হইল, তখন সে চুপ করিয়াই সম্মতি দিল। ইহার পরে বহুদিন গত হইয়াছে। শৈলেশের পিতা কালিপদবাবুও মরিয়াছেন, বৃদ্ধ তর্কালঙ্কারও স্বৰ্গারোহণ করিয়াছেন । এতকালের মধ্যে ও-বাড়ীর কোন খবরই যে শৈলেশেব কানো যায় নাই, তাহা নহে। সে ভায়েদের সংসারে আছে,-জপ-তপ, পূজা-অৰ্চনা, গঙ্গাজল ও গোবর লইয়া দিন কাটিতেছে । তাহার শুচিতার পাগলামিতে ভায়েরা পৰ্যন্ত অতিষ্ঠ হইয়া উঠিয়াছে। ইহার কোনটাই তাহাব শ্ৰীকৃতিসুখকর নহে; কেবল একটু সাত্মনা এই ছিল যে, এই প্ৰকৃতির নারীদের চরিত্রের দোষ বড় কেহ দেয় না । দিলে শৈলেশের কতখানি লাগিতা বলা কঠিন, কিন্তু এ দুর্নামের আভাসমােত্রও কোন সূত্রে আজও তাহাকে শুনিতে হয় নাই । শৈলেশ ভাবিতে লাগিল। ভূপেনবাবুর শিক্ষিতা কন্যার আশা সম্প্রতি পরিত্যাগ না করিলেই নয়। কিন্তু পল্পী-অঞ্চল হইতে আনিয়া একজন পচিশ-ছাব্বিশ বছরের কুশিক্ষিত রমণীর প্রতি গৃহিণীপনার ভার দিলে, তাহার এতদিনের ঘর-সংসারে যে দক্ষযজ্ঞ বাধিবে, তাহাতে সংশয়মাত্র নাই । বিশেষতঃ সোমেন। তাহার জননীই যে তাহার সমস্ত দুর্ভাগ্যের মূলে-এই কথা স্মরণ করিয়া, তাহার একমাত্র পুত্রকে যে সে কিরূপ বিদ্বেষের চােখে দেখিবে, তাহা মনে করিতেই মন তাহার শঙ্কায় পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল। তাহার ভগিনীর বাড়ী শুল্ক্যামবাজারে । বিভা ব্যারিষ্টারের শ্ৰীসেখানে ছেলে থাকিবে ভাল, কিন্তু ইহা তো চিরকালের ব্যবস্থা