পাতা:নবীন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবীন
১৭
দ্বিতীয় পর্ব্ব

বেদনা কী ভাষায় রে
মর্ম্মে মর্মরি গুঞ্জরি বাজে।
সে বেদনা সমীরে সমীরে সঞ্চারে,
চঞ্চল বেগে বিশ্বে দিল দোলা।
দিবানিশা আছি নিদ্রাহরা বিরহে,
তব নন্দনবন অঙ্গন দ্বারে, মনােমােহন বন্ধু,
আকুল প্রাণে
পারিজাত মালা সুগন্ধ হানে॥

 বিদায় দিনের প্রথম হাওয়াটা এবার উৎসবের মধ্যে নিঃশ্বসিত হ’য়ে উঠলো। এখনো কোকিল ডাকচে, এখনাে বকুলবনের সম্বল অজস্র, এখনো আমঞ্জরীর নিমন্ত্রণে মৌমাছিদের আনাগােনা, কিন্তু তবু এই চঞ্চলতার অন্তরে অন্তরে একটা বেদনা শিউরিয়ে উঠলো। সভার বীণা বুঝি নীরব হবে, পথের একতারায় এবার সুর বাঁধা হ’চ্চে। দূর দিগন্তের নীলিমায় দেখা যায় অশ্রুর আভাস—অবসানের গােধূলি-ছায়া নাচে।

চ’লে যায় মরি হায় বসন্তের দিন।
দূর শাখে পিক ডাকে বিরামবিহীন।
অধীর সমীর ভরে
উচ্ছসি’ বকুল ঝরে,
গন্ধ সনে হ’লাে মন সুদূরে বিলীন।