পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষের জিওগ্রাফি ○ আমরা অবশ্য পৃথিবী বলতে প্ৰধানতঃ মাটিই বুঝি। তার প্রমাণ আমরা একে ভূমণ্ডল বলি । এর কারণ আমরা ভূচর জীব-অর্থাৎ মাটির উপর বাস করি। জলচর জীবদের যদি শুধু জল-পিপাসা নয়, সেই সঙ্গে জ্ঞান-পিপাসা থাকত ও সেই সঙ্গে তাদের জ্ঞান তরল ভাষায় ব্যক্ত করবার ক্ষমতা থাকত, তাহলে তারা জিওগ্রাফি না রচনা করে, রচনা করত Hydrography। আর তারা কবিতা লিখত “আমার জন্মজলের উপর”! আর আমরা যাকে বলি মধুর রস, তার নাম তারা দিত লবণ রস । এর থেকেই দেখতে পাচ্ছে যে, আমাদের কল্পনা, আশা, আকাঙ্ক্ষা কতটা মাটিগত,-অর্থাৎ আমরা মনে প্ৰাণে কতটা জিওগ্রাফির অধীন । এ সত্ত্বেও মানুষের কৌতুহল ক্ৰমান্বয় পঞ্চভূতের প্রথম ভূত ক্ষিতিকে ছাড়িয়ে যায়। মানুষের যে মনোভাবকে আমরা ধৰ্ম্ম-মনোভােব বলি, তার কারবার ত পঞ্চম ভূত ব্যোমকে নিয়ে । তা ছাড়া মানুষে আবহমানকাল এই পঞ্চভূতের কোনটি আগে কোনটি পরে, কার পেটে কে জন্মেছে, এ নিয়ে মাথা ঘামিয়েছে ও বকবকি করেছে। যা আছে তাকে মূল সত্য বলে সে কখনও মেনে নিতে পারে নি। কোথেকে সে জন্মালো, এ প্রশ্ন সে যুগে যুগে জিজ্ঞাসা করে এসেছে। এ পৃথিবী নামক গোলকটির সম্বন্ধে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা উক্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়াছিলেন যে, জলই আদি (অপ এব সসুম্বুদেী) স্বষ্টি। জল থেকেই মাটি উদ্ভূত। একালের বৈজ্ঞানিকেরাও ঐ একই কথা বলছেন। তাদের মতে এ পৃথিবী আগে জলময় অথবা জলমগ্ন ছিল, পরে জল থেকে মাটি উদ্ভূত হয়েছে। ভাগ্যিাস হয়েছে, নচেৎ জিওগ্রাফি নামক বিজ্ঞান আমাদের মন থেকে উদ্ভূত হত