পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S SR 8 নানা চৰ্চা ( a ) হিন্দু যে স্বধৰ্ম্ম ত্যাগ ক’রে স্বেচ্ছায় মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করে, এ ঘটনা আজও ঘটে, কিন্তু মুসলমান যে স্বধৰ্ম্ম ত্যাগ ক’রে হিন্দুধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করে, আজ তার কোন পরিচয় পাওয়া যায় না । এই কারণেই “চৈতন্যচরিতামৃতে’র কথা বিশ্বাস করা আমাদের পক্ষে কঠিন । কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে, হিন্দুধৰ্ম্ম অর্থাৎ হিন্দুসমাজের দরজা আজ বন্ধ হ’লেও, অতীতে খোলা ছিল। আজ আমরা এ সমাজ থেকে অনেক হিন্দুকে বহিস্কৃত করতে পারি, কিন্তু কোন অহিন্দুকে তার অন্তভূক্ত করতে পারিনে, কারণ আজকের দিনে হিন্দুসমাজের অর্থ হিন্দুধৰ্ম্ম ও হিন্দুধৰ্ম্মের অর্থ হিন্দু সমাজ। আর হিন্দু-সমাজ হচ্ছে অপর সকল মানবসমাজ হতে বিচ্ছিন্ন ও একঘরে । কিন্তু ঐতিহাসিক মাত্ৰই জানেন যে, হিন্দুযুগে অসংখ্য শক ও যবন বৌদ্ধধৰ্ম্মের শরণ গ্ৰহণ করেন, এবং বৌদ্ধধৰ্ম্ম হিন্দুধৰ্ম্মেরই একটি শাখা মাত্র। আর এ ধৰ্ম্মমন্দিরের দ্বার বিশ্বমানবের छ छ ऐथ्यूङ छिव्ा । ভারত বর্ষের মধ্যযুগের এই নব বৈষ্ণবধৰ্ম্মও সনাতন হিন্দুধৰ্ম্মের একটি নব শাখা মাত্র। তবে এ নিবত্বের কারণ, মুসলমান ধৰ্ম্মের প্রভাব । মুসলমান ধৰ্ম্ম যে প্ৰধানতঃ ঐকান্তিক ভক্তির ধৰ্ম্ম, এ কথা কে না জানে ? ভারতবর্ষের মধ্যযুগের বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম যে মুসলমান ধৰ্ম্মের এতটা গা-ধোসা, তার কারণ পাঁচ-শ বৎসর ধ’রে হিন্দুধৰ্ম্ম ও মুসলমান ধৰ্ম্ম পাশাপাশি বাস ক’রে আসছিল । একেশ্বরবাদ ও মানুষমাত্রেই যে ভগবানের সন্তান, এ দুটিই হচ্ছে মুসলমান ধৰ্ম্মের বড় কথা। তাই এই নব হিন্দুধৰ্ম্মে অহিন্দুরও প্রবেশের পূর্ণ অধিকার ছিল। তা যে ছিল, তার প্রমাণ “চৈতন্য ভাগবৎ’