YRW) নানা চৰ্চা হয়েছিল ১৫৪৪ খৃষ্টাব্দে, বিজুলী খা খুব সম্ভবতঃ এর পরেই কালিঞ্জর হস্তান্তর করেন। মহাপ্রভুর সঙ্গে তঁর যখন সাক্ষাৎ হয়, তখন তার “অল্প বয়েস”, সুতরাং রাজা রামচন্দ্ৰকে তিনি যখন কালিঞ্জার-দুৰ্গ বিক্রী করেন, তখন তার বয়েস আন্দাজ পঞ্চাশ । বিজলী খাঁ কালিঞ্জরের নবাব হওয়া সত্ত্বেও যে পরম-ভাগবত ব’লে গণ্য হয়েছিলেন, এ ব্যাপার অসম্ভব নয়। বৌদ্ধযুগের বড় বড় রাজা-মহারাজারাও পরম সৌগত ব’লে গণ্য হতেন । তা ছাড়া, এ নব বৈষ্ণবধৰ্ম্মে দীক্ষিত হবার জন্য, বিষয়-সম্পত্তি ত্যাগ করবার প্রয়োজন ছিল না । ‘ভোগে অনাসক্ত’ হ’লেই বৈষ্ণব হওয়া যেত। মহাপ্ৰভু রঘুনাথ দাসকে এই কথা বলেই তাকে সংসার-ত্যাগের সঙ্কল্প হ’তে বিরত করেন । মহাপ্ৰভু নিজে সন্ন্যাস গ্ৰহণ করেছিলেন, কিন্তু অপরকে সন্ন্যাস গ্ৰহণ করতে কখনও উৎসাহ দেন নি। এমন কি, বালযোগী অবধূত নিত্যানন্দকে সন্ন্যাসীর ধৰ্ম্ম ত্যাগ ক’রে গাহস্থ্যি ধৰ্ম্ম অবলম্বন করতে বাধ্য করেছিলেন । এই সব কারণে, আমার বিশ্বাস যে “চৈতন্যচরিতামৃতে৷” বর্ণিত উক্ত ঘটনাটি অন্ততঃ চৌদ্দ আন সত্য, অতএব ঐতিহাসিক । কারণ আমরা যাকে ঐতিহাসিক সত্য বলি, তার ভিতর থেকে অনেকখানি খাদ বাদ না দিলে তা বৈজ্ঞানিক সত্য হয় না । ঐতিহাসিক সত্য হচ্ছে অসত্য ও বৈজ্ঞানিক সত্যের মাঝামাঝি একরকম সত্যাসত্য মাত্র । আর এক কথা । আমরা যে প্ৰাচীন বঙ্গসাহিত্যের অনেক কথাই কবিকল্পিত মনে করি, তার কারণ সেকালের অনেক পুথিই আমরা কাব্য হিসেবে পড়ি, যদিচ কাব্যের কোন লক্ষণই তাদের গায়ে নেই, এক পয়ারের বন্ধন
পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।