পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Rote என நதி অপরপক্ষে আমরা যদি প্ৰমাণ করে দিই যে আমরা সভ্য, তাহ’লেই কি আমাদের অস্তিত্ব সম্পূর্ণ হয়ে উঠবে, না। আমাদের জীবনের সকল সমস্তার চূড়ান্ত মীমাংসা হয়ে যাবে?--তা অবশ্য কখনই হবে না, কেননা নিজের সাটিফিকেট নিজের কোনও কাজে লাগে না, ব্যক্তির পক্ষেও নয়। জাতির পক্ষেও নয় । তা ছাড়া নিজের দরখাস্তের বলে, এ ক্ষেত্রে পরের কাছ থেকে ভাল সাটিফিকেট আমরা কিছুতেই আদায় করতে পারব না। সভ্যতা সম্বন্ধে প্ৰতি জাত নিজেকে “সোহহং” মনে করে, কিন্তু অপর কোনও জাতকে “তত্ত্বমসি” বলতে প্ৰস্তুত নয়। তবে প্ৰাচীন সভ্যতার সম্বন্ধে এ কথা অবশ্য খাটে না । প্ৰাচীন গ্রীক ও রোমানসভ্যতার সুখ্যাতি যে ইউরোপের মুখে আর ধরে না, এ কথা কে না। জানে ? তার কারণ এই যে, যে-সভ্যতা মরে ভূত হয়ে গেছে, উচুগলায় তার গুণগান করবার ভিতর কোনও বিপদ নেই ; কেননা কোন জ্যান্ত সভ্যতার উপর ও-সব মরা সভ্যতার কোনও দাবী নেই। প্ৰাচীন ও মৃত সভ্যতা কোনও বৰ্ত্তমান সভ্যতার কাছ থেকে কিছু আদায় করতে পারে না, কিন্তু বৰ্ত্তমান সভ্যতা তার কাছ থেকে ঢের আদায় করে, এবং তার নুন খায় বলেই তার গুণ গায়। ভারতবর্ষের সভ্যতা গ্রীস-রোমের সভ্যতার মত প্ৰাচীন হলেও, প্রশস্য নয়-কেননা তা মৃত নয়, জীবিত । এ সভ্যতার অমার্জনীয় অপরাধ এই যে, তা আজও বেঁচে আছে, এবং বহুকাল বেঁচে আছে বলে আরও বহুকাল বেঁচে থাকতে চায়, তাই তার দাবীর আর অন্ত নেই। এ সভ্যতার সপক্ষে ইউরোপের সাটিফিকেট বার করা অসম্ভব। আর যদিই বা করা যায়, তাতেই বা কি লাভ ? আমাদের জাতীয় সমস্যার আশু মীমাংসা ততটা।