ভারতবর্ষের জিওগ্রাফি পলিমাটি বলি। সেই মাটিই প্ৰধানতঃ গাছপালার জন্মভূমি। আর সমগ্ৰ উত্তরাপথ প্ৰায় এই মাটিতেই তৈরী। আমরা ভারতবর্ষকে উপদ্বীপ, Peninsula বলি, কিন্তু প্ৰকৃতপক্ষে ভারতবর্ষের ত্রিকোর্ণ দক্ষিণাংশই একটি উপদ্বীপ। এ অংশ অতি পুরাকালে একটি দ্বীপ মাত্র ছিল । হিমালয় ও বিন্ধ্যপৰ্ব্বতের মধ্যের দেশ তখন জলমগ্ন ছিল । তারপর সেই জলমগ্ন দেশ যখন হিমালয়ের নদ-নদীর কৃপায় উত্তরাপথ হয়ে উঠল, তখন তার দক্ষিণ দ্বীপ উত্তরাপথের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভারতবর্ষ নামক মহাদেশ সৃষ্টি করলে । দক্ষিণাপথ উত্তরাপথের চাইতে ঢের প্রাচীন দেশ। " তোমরা যখন Geology পড়বে, তখন এ দেশের বয়সের গাছপাথরের অথবা গাছপাথরের বয়েসের হিসেব পাবে ) ( R ) দক্ষিণাপথের বেশির ভাগ মাটি পলিমাটি নয়, অর্থাৎ নদ-নদীর দান নয় ; সে মাটি চূর্ণ পাথর নয়, গলা পাথর। আগ্নেয়গিরি হতে এ মাটি বহির্গত হয়েছে । আগ্নেয়গিরি হতে যে গলা পাথরের ( lava) উদগম হয়েছে, তাই হচ্ছে দক্ষিণাপথের মাটি । উত্তরাপথ বরুণ দেবতার সৃষ্টি, দক্ষিণাপথ অগ্নিদেবতার। এ দুই মাটি এক জাতেরও নয়, এবং এ দুয়ের ধৰ্ম্ম ও এক নয় । এ দুই দেশের জলবায়ুও বিভিন্ন। মেঘ আসে সমূদ্র থেকে, আর পবনদেবই মেঘকে উড়িয়ে নিয়ে আসেন । সুতরাং কোন দেশে। কত বৃষ্টি হয় তা নির্ভর করে কোন দেশে, কোন দিক থেকে কি বাতাস বয়, তার উপর । তোমাদের পূর্বে বলেছি যে, সিন্ধুদেশ হচ্ছে অনাবৃষ্টির ও
পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।