পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য-সন্মিলন । SR ব্যবহারে ক্ষয়ে গিয়ে ক্রমশ কলমের আকার ধারণ করবে, এবং সেই কলমে ইতিহাস লিখিতে হবে। ইতিহাসের আবিষ্কৰ্ত্তা ও রচয়িতার মধ্যে যে অধিকারভেদ আছে-মৈত্র মহাশয় বোধ হয় সেটি মানেন না। অথচ এ কথা সত্য যে, একজনের পক্ষে কলম ছেড়ে খন্ত ধরা যত কঠিন, আর একজনের পক্ষে খন্ত ছেড়ে কলম ধরা তার চাইতে কিছু কম কঠিন নয়। সে যাই হোক, মৈত্র মহাশয় আমাদের আর একটি বিশেষ আবশ্যকীয় কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সে হচ্ছে এই যে, ত্যাগ স্বীকার না করতে পারলে, কোনোরূপ সাধনা করা যায় না। কেননা ত্যাগের অভ্যাস থেকেই সংযমের শিক্ষা লাভ করা যায়। ইতিহাসের বৈজ্ঞানিক সাধনা করতে হলে, আমাদের অসংখ্য মানসিক আলস্য-প্রসূত বিশ্বাস ত্যাগ করতে হবে। আমাদের পুরাণের মায়া, কিম্বদন্তীর মোহ কাটাতে হবে। : শুধু রূপকথা নয়, সেই সঙ্গে কথার মোেহও আমাদের ত্যাগ করতে হবে, অর্থাৎ যথার্থ ইতিহাস রচনা করতে হ’লে সে রচনায়, “শব্দের লালিত্য, বর্ণনার মাধুৰ্য, ভাষার চাতুৰ্য্য” পরিহার করতে হবে। এক কথায় শ্ৰীহৰ্ষচরিত আর কাদম্বরীর ভাষায় লেখা চলবে না । এ কথা অবশ্য অক্ষরে অক্ষরে সত্য । কিন্তু কি কারণে অক্ষয়বাবু অপরকে যে উপদেশ দিয়েছেন নিজে সে উপদেশ অনুসরণ করেন নি, তা ঠিক বুঝতে পারলুম না। কারণ র্তার অভিভাষণের ভাষা যে “অক্ষর-ডম্বর”, এ কথা টাউনহলে সশরীরে উপস্থিত থাকলে স্বয়ং বাণভট্টও স্বীকার করতেন। সম্ভবত অক্ষয়বাবুর মতে ইতিহাসের আখ্যান হচ্ছে বিজ্ঞান, আর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যাখ্যান হচ্ছে কাব্য। - S\9