পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৰ্ত্তমান সভ্যতা বনাম বৰ্ত্তমান যুদ্ধ। SA9 জাতীয় স্বার্থসাধন করা অসম্ভব । অতএব militarism হচ্ছে নবজাৰ্ম্মানীর একমাত্ৰ ধৰ্ম্ম ।” * জেনেরাল বেয়ারণহার্ডি যে স্পষ্টবাদী সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। দস্তু্যতাকে ধৰ্ম্ম বলে প্রচার করতে লোকে সহজেই কুষ্ঠিত হয়। ও-রূপ মনোভাব প্ৰকাশ করতে হলে অপর দেশের লোকে অনেক বড় বড় নীতির কথায় তাকে চাপা দেয় । কিন্তু জৰ্ম্মান-রাজমন্ত্রী কিম্বা জৰ্ম্মান-রাজসেনাপতির পক্ষে এ বিষয়ে কোনরূপ কপটতা করবার প্রয়োজন নেই। জৰ্ম্মানীর রাজ-গুরুপুরোহিতেরা যে নবশাস্ত্র রচনা করেছেন, জৰ্ম্মানীর রাজ-পুরুষদের রাজনীতি সেই শাস্ত্রসঙ্গত। জৰ্ম্মান বৈজ্ঞানিকদের মতে ডারউইনের আবিষ্কৃত ইভলিউসনের নির্গলিতাৰ্থ হচ্ছে—“জোর যার মুলুক তার”। প্রকৃতির নিয়ম লঙ্ঘন করলে মানুষে শুধু মৃত্যুমুখে পতিত হয়। জীবনটা যখন একটা মারামারি কাটাকাটি ব্যাপার, তখন যে মারতে প্ৰস্তুত নয়। তাকে মরতে প্ৰস্তুত হতে হবে-এই হচ্ছে বিধির নিয়ম। ইভলিউসানের এই ব্যাখ্যা, Nietzsche-নামক একটি প্রতিভাশালী লেখক সমগ্ৰ জৰ্ম্মানজাতিকে গ্ৰাহা করিয়েছেন। Nietzsche-র মতে দয়া মমতা পরদুঃখকাতরতা প্ৰভৃতি মনোভাব মানসিক রোগ ব্যতীত আর কিছুই নয়, কেননা এ সকল মনোভাবের প্রশ্ৰয় দেওয়াতে মানুষের প্রকৃতি দুৰ্বল হয়ে পড়ে ; এবং দুর্বলতাই হচ্ছে পৃথিবীতে একমাত্ৰ পাপ এবং সবলতাই এক মাত্র পুণ্য ; শক্তিই হচ্ছে একাধারে সত্য, শিব ও সুন্দর। ইউরোপীয় মানব যে এই সহজ সত্য ভুলে গেছল তার কারণ ইউরোপ খৃষ্টধৰ্ম্ম-নামক রোগে জৰ্জরিত।