পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W08V নানা কথা । নিজের মনের সঙ্গে পরিচয় নেই। বৰ্ত্তমানের এই সমালোচনাসাহিত্য খতিয়ে নিলে দুটি মোটা কথা পাওয়া যায়,-“এক বঙ্কিমচন্দ্রের স্তুতিবাদ, আর এক রবীন্দ্ৰনাথের নিন্দাবাদ। কথা মুখে মুখে বেড়ে যায়, এবং এক পুনরাবৃত্তির গুণে এই নিন্দাপ্ৰশংসা একটা হট্টগোলে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে কে কার উপর টেক্কা দিতে পারেন, সমালোচকদের মধ্যে এই নিয়েই যা | রেষারোখী। আমাদের সাহিত্য-আদালতে এখন জজ নেই-সব জুরি। এবং জুরির বিচারটা অবশ্য সরস্বতীর পক্ষে সুবিচার নয়। বঙ্গী-সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের আসন যে কত উচ্চ, তা আমরা সকলেই জানি -কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গেই যে আমাদের সাহিত্যের ইভলিউসান বন্ধ হয়ে গিয়েছে-সমালোচকদের এ কথা আমরা মানিনে। বাঙলার প্রথম লেখক যে তার শেষ লেখক-এ তি নৈরাশ্যের উক্তি। শুনতে পাই এই নিন্দ প্ৰশংসার মূলে আছে জাতীয় অহংজ্ঞান ও পরজ্ঞান, আর সেই সঙ্গে আছে হিতবুদ্ধি ভৃতবুদ্ধি ইত্যাদি ইত্যাদি। এ সব থাকতে পারে, কিন্তু রবীন্দ্রনাথের নিন্দার ভিতর যা আদপেই নেই- সে হচ্ছে জ্ঞান ও বুদ্ধি। আমার মনে হয়, এই নিন্দাপ্রশংসার মূল কারণ এই যে-রবীন্দ্ৰনাথ আজও ইহলোকে আছেন, আর বঙ্কিমচন্দ্ৰ নেই। আমরা জীবনকে আজও শ্রদ্ধা করতে শিখি নি। তারপর রাজনীতির ক্ষেত্রেও আমরা পিছিয়ে পড়েছি। এ যুগে বাঙলায় যেমন কোনও বড় লেখক জন্মান নি, তেমনি কোনও বড় বক্তারও আবির্ভাব হয় নি। এটা কম আপশোষের কথা নয়। এতদিন আমরা গলার জোরেই ভারতবর্ষের রাজনীতির আসর জমিয়ে রেখেছিলুম। কংগ্রেসে ও কাউনসিলে আমরাই ছিলুম মূল গায়েন-বাম্বে, মাদ্রাজ, পশ্চিম, পাঞ্জাব