পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 নানা-কথা। কথা ওল্টানো চলে না, বদলানো চলে না, পুনরুক্তি চলে না, এবং এলোমেলো ভাবে সাজানো চলে না। “ঢাকা রিভিউ”-এর সম্পাদক মহাশয়ের মতে যে ভাষা প্রশস্ত, সে ভাষায় মুখের ভাষার যা যা দোষ সে সব পূর্ণমাত্রায় দেখা দেয়, কেবলমাত্র আলাপের ভাষার যে সকল গুণ আছে- অর্থাৎ সরলতা, গতি ও প্ৰাণ-সেই গুণগুলিই তাতে নেই। কোন দরিদ্র লোকের যদি কোন ধনী লোকের সহিত দূর সম্পর্কও থাকে, তাহ’লে প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায় যে, সে গরিব বেচারা সেই দূর সম্পর্ককে অতি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তাতে পরিণত করতে চেষ্টা করে। কিন্তু সে চেষ্টার ফল কিরূপ হয়ে থাকে তা’ত সকলেরই নিকট প্ৰত্যক্ষ। আমরা পাঁচজনে মিলে আমাদের মাতৃভাষার ংশমৰ্য্যাদা বাড়াবার জন্যই সংস্কৃত ভাষার আশ্রয় গ্ৰহণ করতে উৎসুক হয়েছি। তার ফলে শুধু আমাদের ভাষার স্বীয় মৰ্যাদা রক্ষা হচ্ছে না। সাধুভাষার লেখকদের তাই দেখতে পাওয়া যায় যে, পদে পদে বিপদ ঘটে থাকে। আমার বিশ্বাস যে, আমরা যদি সংস্কৃত ভাষার দ্বারস্থ না হয়ে ঘরের ভাষার উপরই নির্ভর করি, তাহলে আমাদের লেখার চাল স্বচ্ছন্দ হবে, এবং আমাদের ঘরের লোকের সঙ্গে মনোভাবের আদান প্ৰদানটাও সহজ হয়ে আসবে। যদি আমাদের বক্তব্য কথা কিছু থাকে, তাহ’লে নিজের ভাষাতে তা যত স্পষ্ট করে বলা যায়, কোন কৃত্রিম ভাষাতে তত স্পষ্ট করে বলা যাবে না। বাঙ্গলা ভাষার বিশেষত্ব। কেবলমাত্র পড়ে-পাওয়া-চোদ্দা-আনা-গোছ সংস্কৃত শব্দ বর্জন করলেই যে আমাদের মােক্ষলাভ হবে, তা নয়। আমরা লেখায়