পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sy নানা-কঁথা। রাখবার দরুণ, আমাদের সাহিত্য দিন দিন শক্তিহীন এবং প্ৰাণহীন হয়ে পড়ছে। একালের ম্রিয়মাণ লেখার সঙ্গে তুলনা করে দেখলেই স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, “আলালের ঘরের দুলাল” এবং “হুতোম প্যাচার নক্সার” ভাষাতে কত অধিক ওজঃ-ধাতু আছে। আমরা যে বাঙ্গলা শব্দমাত্রকেই জাতে তুলে নিতে চাচ্ছি, তাতে আমাদের “সাহিত্যিক সঙ্কীর্ণতা” প্ৰকাশ পায় না, যদি কিছু প্ৰকাশ পায় ত উদারতা। " আর একটি কথা। অন্যান্য জীবের মত ভাষারও একটা আকৃতি ও একটা গঠন আছে। বৈজ্ঞানিকদের মতে, জীবে জীবে প্ৰভেদ ঐ গঠনের পার্থক্যেরই উপর নির্ভর করে, আকৃতির উপর নয়। পাখা থাকা সত্ত্বেও আরসোলা যে পোকা, পাখী নয়, এ জ্ঞান আমাদের দেশের নিরক্ষার লোকেরও আছে। এমন কি, কবিরাও বিহঙ্গকে পতঙ্গের প্ৰতিবাক্য হিসেবে ব্যবহার করেন না । অন্যান্য জীবের মত ভাষার বিশেষত্বও তার গঠন আশ্ৰয় করে থাকে, কিন্তু তা তার দেহাকৃতির উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। ভাষার দেহের পরিচয় অভিধানে, এবং তার গঠনের পরিচয় ব্যাকরণে। সুতরাং বাঙ্গলায় এবং সংস্কৃতে আকৃতিগত মিল থাকলেও, জাতিগত কোনরূপ মিল নেই। প্রথমটি হচ্ছে analytic, ... দ্বিতীয়টি inflectional ভাষা। সুতরাং বাঙ্গলাকে সংস্কৃতের অনুরূপ। করে গড়ে তুলতে চেষ্টা করে আমরা যে বঙ্গভাষার জাতি নষ্ট করি। শুধু তাই নয়, তার প্রাণবধ করবার উপক্রম করি। এই কথাটি সপ্রমাণ করতে হলে এ বিষয়ে একটি বিস্তৃত প্ৰবন্ধ লিখতে হয়, সুতরাং এস্থালৈ আমি শুধু কথাটার উল্লেখ মাত্র করে” ক্ষান্ত হলুম। :