পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার অপরাধ এই যে, ব্ৰহ্মবিদ্যা যে ক্ষত্ৰিয়ের আবিষ্কার এবং কায়স্থ যে ক্ষত্রিয়, এ সত্য স্বীকার করতে আমি ইতস্ততঃ করি। আমার বিশ্বাস-সে। আমি ব্ৰাহ্মণ" বলে নয়, আইন ব্যবসায়ী বলে। কিসে কি প্রমাণ হয়, আর না হয়, সে বিষয়ে আমার কতকটা জ্ঞান আছে। সে যাই হােক, পূর্বোক্ত অভিযোগ যে কতক পরিমাণে সত্য, এ কথা কোনও ব্রাহ্মণ-সন্তান পৈতাছুয়ে অস্বীকার করতে পারবেন না।. জাত্যভিমান আমাদের মনের কোণে, অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে এবং সময়ে অসময়ে বের । হয়ে পড়ে। কুলের গৌরব করাটা এদেশে যদি কারও, পক্ষে মাৰ্জনীয়, হয় ত সে ব্ৰাহ্মণের পক্ষে। ... আমি জানি যে, আমরা যে মুনিঋষিদের বংশধর। এ কথা আজকাল নিৰ্ভয়ে বলা চলে না। কেননা তারা ব্ৰাহ্মণ ছিলেন। কিম্বা ক্ষত্ৰিয় ছিলেন, তাই নিয়ে এমন একটি তর্ক উত্থাপিত করা হয়েছে, যার মীমাংসা হওয়া অসম্ভব। কিন্তু আমাদের জাতীয়গৌরব প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে এ মামলার একটা চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করবার দরকার নেই। উপনিষদ, ক্ষত্ৰিয়ের পৈতৃক সম্পত্তি হলেও, ব্ৰাহ্মণে তা এতকাল, ধয়ে ভোগদখল করে আসছেন যে সে দখলী সত্ত্ব নষ্ট করবার জন্য কোনো পুরাণে দলিল দস্তাবেজ আর সমাজের আদালতে গ্ৰাহ হবে না। বহুকাল ধরে যে যোগসূত্র হিন্দুর অতীতকে তার বর্তমানের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে—সে হচ্ছে যজ্ঞসুত্র। দূর অতীতের কথাও ছেড়ে দিলে, এ সত্য কারও অস্বীকার করবার। যো নেই যে, ভারতবর্ষের সাতশ বৎসর ব্যাপী ঘোর অমানিশার মধ্যে যে জাতি বিদ্যার ধীয়ের ; প্ৰদীপ জ্বালিয়ে রেখেছিলেন। অশেষ দুঃখ দৈন্য নৈরাশ্যের মধ্যে যে জাতি সাগ্নিকের অগ্নির মত । [সংস্কৃত ভাষা ও সংস্কৃত সাহিত্য সযত্নেরক্ষা করে এসেছেন, সে