পাতা:নাম-সার - গিরিবালা দেবী.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূমিকা

 প্রায় একশত বাইশ বৎসর পূর্ব্বে সাধিকা গিরিবালা দেবী ভবানীপুরে এক সম্ভ্রান্ত বংশে জন্মগ্রহণ করেন। ইঁহার পিতার নাম ছিল নন্দকুমার মুখোপাধ্যায়, স্বামীর নাম ছিল পার্ব্বতীচরণ চট্টোপাধ্যায়। এই রত্নগর্ভা মহিলার সবচেয়ে বড় পরিচয় ইনি−শ্রীশ্রীগৌরীমার জননী।

 গৌরীমার জননী পরিচয়ও ইঁহার যথেষ্ট নয়। সাধনসঙ্গীত রচয়িত্রীরূপে ইহার নিজস্ব স্বতন্ত্র পরিচয় আছে তাহা একালের লোক জানেন না। কারণ তাঁহার রচিত গানগুলি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হইলেও প্রচারিত হয় নাই। সেকালের ভক্তদের কণ্ঠে অবশ্য উদ্গীত হইত। সেইসকল ভক্তগণ এখন স্বর্গত।

 গিরিবালা দেবীর গানগুলি “নামসার” নামে একখানি পুস্তিকায় ১৩০২ সালে প্রকাশিত হইয়াছিল। এতদিন পরে তাহার পুনর্মুদ্রণ হইল।

 আমাদের দেশে শাক্ত সঙ্গীত রচনার প্রবর্ত্তক সাধক রামপ্রসাদ। রামপ্রসাদের পর কমলাকান্ত শাক্ত সঙ্গীতের ধারার গৌরব রক্ষা করিয়াছিলেন। তৎপরেও ঐ ধারার বিলোপ হয় নাই। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ পর্য্যন্ত বহু ভক্তই শ্যামাসঙ্গীত রচনা করিয়া ঐ ধারাটিকে অক্ষুণ্ণ রাখিয়াছিলেন। কমলাকান্তের পরবর্ত্তী শাক্ত সঙ্গীত রচয়িতাদের গানে ভক্তির অভাব ঘটে নাই, কিন্তু সাহিত্যিক মূল্য বিশেষ কিছু না থাকায় সেগুলির অতি অল্পসংখ্যকই আমরা মুদ্রিত আকারে পাইয়াছি।

 শাক্ত সঙ্গীত যাঁহারা রচনা করিয়াছিলেন−তাঁহাদের মধ্যে কোন মহিলা কবির নাম আমরা পাই নাই। গিরিবালা দেবীই বোধ হয় প্রথম শাক্ত সঙ্গীত রচয়িত্রী। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে গিরিবালা দেবীর এই শ্যামাসঙ্গীতগুলি রচিত হয়। এইগুলির সংবাদ সংগ্রাহকদের জানা ছিল না। অতএব বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এই গানগুলি