পাতা:নীল-দর্পণ নাটক - দীনবন্ধু মিত্র.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অঙ্ক।
৪৭

 তােমারি———তাতে আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে, প্রাণেশ্বর, তােমার চরিত্রে যদি দোষ স্পর্শে তবে সুচরিত্রের আদর্শ হবে কে? আমি স্বভাবতঃ চঞ্চল, এক স্থানে এক দণ্ড স্থির হয়ে বসিতে পারিনে বলে ঠাকুরুণ আমাকে পাগ্‌লির মেয়ে বলেন। এখন আমার সে চাঞ্চল্য কোথায়! যে স্থানে বসে প্রাণপতির পত্র খুলিয়াছি সেই স্থানেই এক প্রহর বসে আছি। আমার উপরে চঞ্চলতা অন্তরে প্রবেশ করিয়াছে। ভাত উথলিয়া ফেনা সমূহে আবৃত হইলে উপরিভাগ স্থির হয়, কিন্তু ভিতরে ফুটিয়া থাকে; আমি এখন সেইরূপ হইলাম। আর আমার সে হাস্য বদন নাই। হাসি মুখের রমণী; সুখের বিনাশে হাসির সহমরণ। প্রাণনাথ, তুমি সফল হইলেই সকল রক্ষা, তােমার বিরস বদন দেখিলে আমি দশদিক্‌ অন্ধকার দেখি। হে অবােধ মন! তুমি প্রবােধ মনিবে না? তুমি কি অবােধ হইলে পার আছে, তােমার কান্না কেহ দেখিতে পায় না, কেহ শুনিতেও পায় না; কিন্তু নয়ন, তুমিই আমাকে লজ্জা দেবে (চক্ষু মুছিয়া) তুমি শান্ত না হইলে আমি ঘরের বাহিরে যেতে পারিনে —