পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

 আজ বয়োজ্যেষ্ঠগণ তরুণ সমাজকে অকর্ম্মণ্য বা অপদার্থ জ্ঞান করিতে পারেন কিন্তু যুবকেরা যদি এই সঙ্কল্প করে যে তাহারা চরিত্রগুণে এবং সেবা ও কর্ম্মক্ষমতার দ্বারা বয়োজ্যেষ্ঠগণের হৃদয় অধিকার করিবে এবং তাহাদের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা আকর্ষণ করিবে তাহা হইলে কে বাধা প্রদান করিতে পারে?

 পৃথিবীব্যাপী যে যুব-আন্দোলন বা youth movement এখন চলিতেছে—ইহার স্বরূপ কি, উদ্দেশ্য ও কর্ম্মপদ্ধতি কি—সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা সকলের নাই। যুবক ও যুবতীরা সঙ্ঘবদ্ধ হইয়া যে কোনও আন্দোলন শুরু করিলে সে আন্দোলন যে “যুব-আন্দোলন” আখ্যার যোগ্য হইবে—এ কথা বলা যায় না। বর্ত্তমান অবস্থা এবং বাস্তবের কঠিন বন্ধনের প্রতি প্রবল অসন্তোষ হইতেই যুব-আন্দোলনের উৎপত্তি। তরুণ প্রাণ কখনও বর্ত্তমানকে, বাস্তবকে চরম সত্য বলিয়া গ্রহণ করিতে পারে না। বিশেষতঃ যেখানে সে বর্ত্তমানের মধ্যে, বাস্তবের মধ্যে, অত্যাচার, অবিচার বা অনাচার দেখিতে পায় সেখানে তাহার সমস্ত প্রাণ বিদ্রোহী হইয়া উঠে—সে ঐ অবস্থার একটা আমূল পরিবর্ত্তন করিতে সাহসী হয়। যুব-আন্দোলনের উৎপত্তি প্রবল অসন্তোষ হইতে —ইহার উদ্দেশ্য ব্যক্তিকে, সমাজকে, রাষ্ট্রকে নূতন আদর্শে নূতন ভাবে গড়িয়া তোলা। সুতরাং আদর্শবাদই যুব-আন্দোলনের প্রাণ।

৯২