পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



যুব-আন্দোলন

পৃথিবীর মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করিত। কালের চক্রবৎ পরিবর্ত্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা সে প্রাচীন গৌরব হারাইয়াছি। আজ আমরা শুধু পরাধীন তাহা নয়,―বিদেশী সভ্যতার সম্মোহন-বাণের আঘাতে আমরা আমাদের প্রাণ ধর্ম্ম হরাইতে বসিয়াছি। তবে আনন্দের বিষয় এই যে অজ্ঞান-নিশা প্রায় কাটিয়া গিয়াছে; আমরা জাতীয় চৈতন্য ফিরিয়া পাইতেছি।

 সকল জাতি বা সকল সভ্যতার যে পতনের পর পুনরভ্যুত্থান ঘটিয়া থাকে―এ কথা বলা যায় না। ভগবানের আশীর্ব্বাদে আমাদের দেশে কিন্তু পতনের পর পুরভ্যুত্থান আরম্ভ হইয়াছে। আমাদের এই জাতীয় আন্দোলন বাহ্যিক চাঞ্চল্যমাত্র নয়,―ইহা জাতীর আত্মার জাগরণ ও অভিব্যক্তি। আমার কথা যে সত্য তার প্রমাণ এই যে আমাদের দেশে নব জাগরণের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নূতন সৃষ্টি আরম্ভ হইয়াছে। সৃষ্টিই জীবনের লক্ষণ, কাব্যে সাহিত্যে, শিল্পে বাণিজ্যে, ধর্ম্মে কর্ম্মে, কলা বিজ্ঞানে―নূতন সৃষ্টির যে পরিচয় ভারতবাসী দিতেছে―তাহা হইতে সপ্রমাণ হইতেছে যে ভারতের আত্মা জাগিয়াছে, ভারতীয় সভ্যতার নূতন অধ্যায় আমাদের চোখের সামনেই রচিত হইতেছে।

 বৈজ্ঞানিকেরা বলেন যে, কোনও সভ্যতার পতন হইলে সেই জাতির সৃষ্টি-শক্তি লোপ পায়, জাতির চিন্তাশক্তি ও কর্ম্মপ্রচেষ্টা গতানুগতিক পন্থা অনুসরণ করিতে থাকে। ব্যক্তি ও জাতির

১২৫