পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

 মনের এই অবস্থায়ই আমরা স্বাধীনতার একনিষ্ঠ প্রচারক হইতে পারি। স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় মত্ত নরনারী আমরা, তখন গ্রামে গ্রামে, দ্বারে দ্বারে গিয়া স্বাধীনতার এই নূতন বাণী প্রচার করিতে পারিব। এই প্রচার কার্য্যের ফলে তখন জীবনের সকল পথেই নবজীবনের স্পন্দন আসিবে। একদিক দিয়া ভাঙ্গা, অপর দিক দিয়া গঠন আরম্ভ হইবে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ সকলেরই ক্ষেত্র তখন এক নূতন প্রেরণায় উদ্বেল হইয়া উঠিবে—সে প্রেরণা স্বাধীনতা ও সাম্যের। পথ নিরোধকারী আচার, যুগসঞ্চিত বাধা, জীবনের সকল মিথ্যা মাপকাঠি সেদিন চূর্ণ বিধ্বস্ত হইয়া নবসৃষ্টির পথ সুগম করিয়া দিবে। আমরা যদি মুক্তি, সাম্য ও মৈত্রীর উপরে প্রতিষ্ঠিত নব-সমাজের সৃষ্টি করিতে পারি, তবে শুধুমাত্র যে জাতীয় সমস্যার সমাধান করা হইবে তাহা নয়,—জগতের এক বিপুল সমস্যার সমাধানও করা হইবে।

 ভারতবর্ষ একটী ছোট-খাটো পৃথিবী—জগতের সকল সমস্যাই ভারতবর্ষে বর্ত্তমান আছে। তাই ভারতের সমস্যা সমাধানের অর্থই জগতের সমস্যার নিরাকরণ। অবর্ণনীয় দুঃখ বেদনা ও অগণিত বিরোধ-সংঘর্ষের মধ্য দিয়া ভারতবর্ষ আজিও বাঁচিয়া আছে। তাহার কারণ, তাহার একটী বিশিষ্ট সাধনা আছে। জগৎকে রক্ষা করিতে হইবে বলিয়াই ভারতবর্ষের আজ নিজেকে বাঁচাইতে হইবে। স্বাধীন ভারতবর্ষ জগতের শিক্ষা দীক্ষা ও সভ্যতাকে

১৫০