পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাত্র আন্দোলন

গুরুজনের সহিত বিবেক-প্রণোদিত হইয়া বিরোধ করিতে অনেক সময়ে মানুষের অবস্থা কুরুক্ষেত্র প্রাঙ্গনে অৰ্জ্জুনের অবস্থার মত হইয়া দাঁড়ায়। সুতরাং এরূপ সংগ্রামে অপূর্ব্ব শক্তি, সাহস ও তেজ চাই। হে বন্ধুগণ, সে শক্তির সাধনা তোমরা কর।

 আমি গোড়ায় বলিয়াছি যে আমাদের দেশে এখনও যুবক-সমাজ ও ছাত্র-সমাজ তাহার যোগ্য আসন পায় নাই। অভ্যাসের দরুণ আমরা আমাদের অবস্থা উপলব্ধি করি না। কিন্তু স্বাধীন দেশে আমরা যখন যাই তখন সেখানকার অবস্থার সহিত নিজের অবস্থা তুলনা করিয়া আমাদের চক্ষু উন্মীলিত হয়। স্বাধীন দেশের ছাত্রসমাজ অভিভাবকদের নিকট, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ত্তৃপক্ষের নিকট, পুলিশের নিকট, গবর্ণমেণ্টের নিকট এবং সমাজের নিকট যে সমাদর——এমন কি শ্রদ্ধা পাইয়া থাকে তাহা আমাদের অনেকের কল্পনার বাহিরে। আর আমাদের ছাত্রেরা নিজেদের ঘরে কৃপার পাত্র, বিদ্যালয়ে উপদেশের ও শাসনের পাত্র, সমাজে নাবালকের তুল্য এবং পুলিশ ও গবর্ণমেণ্টের নিকট নিত্য অবিশ্বাসের পাত্র। এই অবিশ্বাস, অশ্রদ্ধা ও শাসনের ভিতর মনুষ্যত্বের উদ্বোধন কি করিয়া সম্ভব? স্বাধীন দেশের ছাত্র-সমাজ যে সমাদর ও শ্রদ্ধা পায় তাহার ফলে তাহাদের দায়িত্ববোধ ফুটিয়া উঠে, কর্ত্তব্য-বুদ্ধি জাগরিত হয় এবং তাহাদের অন্তর্নিহিত দেবত্বের স্ফুরণ হয়। আমাদের সমাজের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ এই যে