পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাত্র আন্দোলন

জীবনে সাধনা যেরূপ বহুবৎসর ব্যাপী হইয়া থাকে, জাতির জীবনেও সেইরপ সাধনার ধারা পুরুষানুক্রমে চলিয়া আসে। তাই মনীষীরা বলিয়া থাকেন—আদর্শ একটা প্রাণহীন ও গতিহীন বস্তু নয়। তার বেগ আছে, গতি আছে, প্রাণসঞ্চারিণী শক্তি আছে।

 যে আদর্শ আমাদের সমাজে গত একশত বৎসর ধরিয়া আত্মবিকাশের চেষ্টা করিতেছে আমরা তার পরিচয় সব সময়ে না পাইতে পারি। যে চিন্তাশীল, যার অন্তর্দষ্টি আছে শুধু সে ব্যক্তি বাহ্য ঘটনা পরম্পরার অন্তরালে অন্তঃসলিলা ফল্গুনদীরূপা এই আদর্শের ধারাকে ধরিতে পারে। এই আদর্শই আমাদের যুগধর্ম্ম—the idea of the age. ইহার উপলব্ধি হইলে মানুষ বুঝিতে পারে তার পথ কি, তার পথ প্রদর্শক কে। কিন্তু এই উপলব্ধি সব সময়ে হয়না বলিয়া আমরা প্রায়ই ভ্রান্ত পথের দিকে আকৃষ্ট হই এবং ভ্রান্ত গুরু অনুবর্ত্তী হইয়া থাকি। হে ছাত্রমণ্ডলী, যদি জীবন গঠন করি চাও—তবে ভ্রান্ত গুরু ও ভ্রান্ত পথের প্রভাব হইতে আত্মরক্ষা কর এবং নিজে আত্মস্থ হইয়া জীবনের প্রকৃত আদর্শ চিনিয়া লও।

 বৎসর পূর্ব্বে যে আদর্শ বাঙ্গলার ছাত্রসমাজকে অনুপ্রাণিত করিত তাহা স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ। সে আদর্শের প্রভাবে তরুণ বাঙ্গালী ষড়রিপু জয় করিয়া স্বার্থপরতা ও সকল প্রকার মলিনতা হইতে মুক্ত হইয়া আধ্যাত্মিক শক্তির বলে শুদ্ধ বুদ্ধ জীবন

২৩