পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

লাভের জন্য বদ্ধপরিকর হইত। সমাজ ও জাতি গঠনের মূল—ব্যক্তিত্ব বিকাশ। তাই স্বামী বিবেকানন্দ সর্ব্বদা বলিতেন “man making is my mission”—খাঁটি মানুষ তৈয়ারী করাই আমার জীবনের উদ্দেশ্য।

 কিন্তু ব্যক্তিত্ব বিকাশের দিকে এত জোর দিলেও স্বামী বিবেকানন্দ জাতির কথা একেবারে ভুলিয়া যান নাই। কর্ম্মবিহীন সন্ন্যাসে অথবা পুরুষকারহীন অদৃষ্টবাদে তিনি বিশ্বাস করিতেন না। রামকৃষ্ণ পরমহংস নিজের জীবনের সাধনার ভিতর দিয়া সর্ব্ব ধর্ম্মের যে সমন্বয় করিতে পারিয়াছিলেন তাহাই স্বামীজির জীবনের মূল মন্ত্র ছিল এবং তাহাই ভবিষ্যৎ ভারতের জাতীয়তার মূল ভিত্তি। এই সর্ব্ব-ধর্ম্ম-সমন্বয় ও সকল-মত-সহিষ্ণুতার প্রতিষ্ঠা না হইলে আমাদের এই বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশে জাতীয়তা-সৌধ নির্ম্মিত হইতে পারিত না

 বিবেকানন্দ-যুগের পূর্ব্বে যখন আমাদের দেশে নবযুগ প্রথম আরম্ভ হয় তখন আমাদের পথ প্রদর্শক ছিলেন রাজা রামহেন রায়। ধর্ম্মের নামে যে সব অধর্ম্ম চলিতেছিল এবং যে সব আবর্জ্জনা ও কুসংস্কার ধর্ম্মের নামে সমাজ-দেহকে আচ্ছাদন করিয়াছিল এবং হিন্দু সমাজকে শতধা বিভক্ত করিয়াছিল, তাহা ধ্বংস করিবার জন্য রাজা রামমোহন কৃতসংকল্প হইয়াছিলেন। বেদান্তের সত্য প্রচারিত হইলে হিন্দু সমাজ-ধর্ম্মের বহিরাবরণ বর্জ্জন করিয়া সত্য ধর্ম্ম আশ্রয় করিতে পারিবে এবং ভেদজ্ঞান ভুলিয়া আবার একতা-

২৪