পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাত্র আন্দোলন

অধ্যায়ের সূত্রপাত হইয়াছিল। সে দিন-ই আমি সর্ব্ব প্রথম অনুভব করিলাম—কোনও মহৎ উদ্দেশ্যে নির্য্যাতন সহ্য করার মধ্যে একটা বিমল আনন্দ আছে। এই আনন্দের সহিত জীবনের আর কোন আমোদ প্রমোদেরই তুলনা হয় না। আর সমস্তই ইহার নিকট তুচ্ছ—অতি তুচ্ছ। ইতিপূর্ব্বেই আমি আদর্শের মধ্য দিয়া নীতিজ্ঞান ও স্বাদেশিকতার পরিচয় পাইয়া ছিলাম; কিন্তু সেই দিনই সর্ব্ব প্রথম এই সমস্তের পরীক্ষা—শুধু পরীক্ষা নয়, অগ্নি পরীক্ষা হইয়া গেল। এই গুরুতর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া আমি দেখিলাম—আমার ভবিষ্যৎ জীবনের গতি ও কর্ম্মপদ্ধতি নিয়ন্ত্রিত হইয়া গিয়াছে।

 বন্ধুগণ, আপনারা হয়ত মনে করিতেছেন যে, এই লোকটা বড়ই অদ্ভুত। কোথায় আমাদের কথা আলোচনা করিবে,—না তাহার পরিবর্ত্তে সে নিজের কথাই আলোচনা করিতে লাগিল। কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, আমি এখানে কেন আসিয়াছি? আমার উদ্দেশ্য কি, তাহা আপনারা স্থির করিয়াছেন কি? নীতিজ্ঞান ও স্বাদেশিকতা সম্পর্কে লম্বা বক্তৃতা করিতে আমি এখানে আসি নাই; আমি আসিয়াছি আমার নিজের অভিজ্ঞতালব্ধ কয়েকটি জ্ঞানের কথা আপনাদের নিকট উপস্থিত করিতে। একথা কি সত্য নহে যে, কেবল সেই উপদেশেরই মূল্য আছে, যে, উপদেশ প্রকৃত পক্ষে নির্য্যাতন ও অভিজ্ঞতার সাহায্যে সংগৃহীত হইয়াছে?

৫৭