পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

 যখন চক্ষু উন্মীলন করিয়া দেশ-বিদেশে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি তখন কি দেখিতে পাই?—দেখিতে পাই চারিদিকে জীবনের স্পন্দন, জাগরণের সমুদয় লক্ষণ ও নবসৃষ্টির উন্মেষ। পৃথিবীর এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত তরুণের প্রাণ জাগিয়াছে। দুর্ব্বলতা, অবিশ্বাস ও ক্লৈব্য পরিহার করিয়া সে আপনার পায়ে ভর করিয়া দাঁড়াইতেছে। ভবিষ্যতের উত্তরাধিকারী যাহারা সেই তরুণ সম্প্রদায় আজ নিশ্চেষ্ট নয়। তাহারা আজ অধিকার লাভের জন্য বদ্ধপরিকর হইতেছে এবং অধিকার সংরক্ষণের জন্য যোগ্যতা অর্জ্জন করিতেছে। তরুণের এই নব জাগরণ পৃথিবীর ইতিহাসে নূতন ঘটনা নয়; ইহাকে পাশ্চাত্য বস্তু জ্ঞান করিলে আমরা অন্যায় করিব। সকল দেশে ও সকল যুগে ধ্বংস ও সৃষ্টির আবশ্যকতা যখনই ঘটিয়াছে তথনই তরুণের প্রাণ জাগিয়াছে। কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের প্রাঙ্গণে দাঁড়াইয়া শ্রীকৃষ্ণ যখন বজ্রনির্ঘোষে বলিয়াছেন “ক্লৈব্যং মাস্ম গমঃ পার্থ” তখন তাঁহার ভিতর দিয়া মৃত্যুঞ্জয়ী তরুণ শক্তির বাণী প্রকট হইয়াছিল। তাই গত বৎসর নাগপুরে তরুণদের সভায় আমি একদিন বলিয়াছিলম “The voice of Krishna was the voice of immortal Youth”। ধ্বংসের করাল মূর্ত্তি দেখিয়া অর্জ্জুন ভীতিগ্রস্ত হইয়াছিলেন; ক্ষণেকের জন্য তিনি বিস্মৃত হইয়াছিলেন যে ধ্বংস বিনা সৃষ্টি হইতে পারে না; তাই শ্রীমদ্‌ভগবৎ গীতার

৭৬