পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যুব-আন্দোলন

সাহায্যে তাহাকে বুঝাইতে হইয়াছিল যে কুরুক্ষেত্রের মহাশ্মশানের উপরই ধর্ম্মরাজ্যের প্রতিষ্ঠা হইবে।

 এখন প্রশ্ন উঠিতেছে তরুণের আদর্শ কি? তরুণের আদর্শ—বর্ত্তমানের সকল প্রকার বন্ধন, অত্যাচার, অবিচার ও অনাচার ধ্বংস করিয়া নূতন সমাজ ও নূতন জাতি সৃষ্টি করা। প্রাচীনের ও বর্ত্তমানের উচ্চ প্রাচীর অতিক্রম করিয়া সুদূরের সন্ধান পাইবার জন্য মানবের দৃষ্টি অতি আদিম কাল হইতে উৎসুক আছে। শুধু তাই নয়, সুদূরের স্বপ্নকে বাস্তবের মধ্যে মূর্ত্ত করিবার চেষ্টা মানবজাতি বারবার করিয়াছে। এই প্রেরণার ফলে অতি প্রাচীনকালে ভারতবর্ষে গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব হয় এবং প্রাচীন গ্রীসে সক্রেটীস্, প্লেটো প্রভৃতি মনীষিবৃন্দের অভ্যুদয় হয়।

 আমরা মনে করিতে পারি যে তরুণদের রচিত যে কোন প্রতিষ্ঠান—যেমন সেবাসমিতি—যুবক সমিতি বা তরুণসঙ্ঘ আখ্যা পাইবার যোগ্য, কিন্তু এ ধারণা ভ্রান্ত। যে প্রতিষ্ঠান বা আন্দোলনের মূলে স্বাধীন চিন্তা ও নূতন প্রেরণা নাই সে প্রতিষ্ঠান বা আন্দোলন তরুণের প্রতিষ্ঠান বা তরুণের আন্দোলন বলিয়া অভিহিত হইতে পারে না। তরুণ প্রাণের লক্ষণ কি?—লক্ষণ এই যে সে বর্ত্তমানকে বা বাস্তবকে অখণ্ড সত্য বলিয়া গ্রহণ করিতে পারে না, সে বন্ধনের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করিতে চায় এবং সে চায় আনিতে ধ্বংসের মহাশ্মশানের

৭৭